নিউজবাংলা: ০৫ মার্চ, শনিবার:
নজরুল ইসলাম, মধুপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:
কেন্দ্র থেকে নয়,প্রান্ত থেকেই শুরু হোক’ স্লোগান নিয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের প্রথম কলম ভাস্কর্য। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন তরুণ এবং ৫০ জন তরুণী উদ্যোগ নিয়ে উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামে এইচ এম জাহাঙ্গীর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণ করবে এ ভাস্কর্যটি।
বাংলাদেশের ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,৫০টি উচ্চ বিদ্যালয়,৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর ৫০ লাখ ব্যবহৃত কলম দ্বারা নির্মাণ করা হবে এই ভাস্কর্য। এছাড়াও ৫০ ফুট উচ্চতার এ ভাস্কর্যে স্থান পাবে বারাক ওবামাসহ বিশ্বের ৫০ জন বরেণ্য ব্যক্তি এবং বাংলাদেশের ৫০ বরেণ্য ব্যক্তির ব্যবহৃত কলম।
কলমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই বিশ্বের প্রথম কলম ভাস্কর্য’২১ এবং কলম যাদুঘর নির্মাণ করে গিনিস বুকে নাম লেখানোর প্রত্যয় নিয়ে দেশের ১৬ টি জেলায় পরিত্যক্ত কলম সংগ্রহ করে যাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
আগামী ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তিতে উদ্বোধন করা হবে ভাস্কর্যটি। ইতোমধ্যে ২০ লাখ পরিত্যক্ত কলম সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাধীনতার মাস মার্চের ২০ তারিখ রোববার ভাস্কর্যটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী এবং মধুপুর-ধনবাড়ি আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ড.আব্দুর রাজ্জাক।
২০১২ সালে পরিত্যক্ত কলম ছুড়তে গিয়ে অন্ধ হয় আউশনারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো.আলমগীর হোসেন। ক্লাস চলাকালিন সময়ে এক শিক্ষার্থী কলমের কালি শেষ হয়ে যাওয়ার পর তা জানালা দিয়ে বাহিরে ফেলতে গিয়ে গ্রিলে লেগে কলমটি ফিরে আসে। দুর্ভাগ্যক্রমে কলমটির নিব আলমগীরের চোখে ঢুকে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলেও রেটিনায় প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্তির কারনে পরবর্তীতে আলমগীরের চোখটি অন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কলম ভাস্কর্যের পরিকল্পনা করা হয়।
ভাস্কর্যটি নির্মানের উদ্যোক্তা ১০০ জন তরুণ-তরুণীকে সহযোগিতা করবেন বাংলাদেশের বরেণ্য ভাস্কর্য শিল্পী মৃনাল হক। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র জাবেদ জাফরি সংগ্রহ করেছেন দুই জীবন্ত কিংবদন্তী শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড.মোহাম্মদ ইউনুস এবং বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড.কামাল হোসেনের ব্যবহৃত কলম। অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্র জাহাঙ্গীর কবিরের আমেরিকার মিসিগান শহরের বন্ধু রবার্ট ডি এবং তার বড় বোন মেসাচুয়েট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ব্যবহৃত কলমও স্থান পাবে মধুপুরের কলম ভাস্কর্যে।
ভাস্কর্যটির পাশেই নির্মিত হবে আরো একটি কলম যাদুঘর। যাদুঘরটিতে সংরক্ষিত থাকবে বিশ্ববিখ্যাত লেখক,কবি,সাহিত্যিক,সাংবাদিক,শিল্পী,নোবেলজয়ী,অস্কারজয়ীর মতো সেরাদের ব্যবহৃত কলম ও তাদের হাতের লেখা। একই ছাদের নীচে নির্মিত কলম যাদুঘরটিও হবে বিশ্বের প্রথম কলম যাদুঘর।
কলম ভাস্কর্য ২০২১ এবং কলম যাদুঘর নির্মাণের প্রচারণায় তৈরি হয়েছে একটি সংগীত। সংগীত লিখেছেন বিখ্যাত গীতিকার মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান এবং সুর করেছেন সুরকার মাইনুল ইসলাম খান। সংগীতটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশ বরেণ্য রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা ও মাকসুদ। তাদের সাথে কণ্ঠ দিয়েছেন ৪৮ জন তরুণ-তরুণী।
অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ছাত্র জাহাঙ্গীর কবির জানান,তারুণ্যের এই প্রয়াসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে কলম ভাস্কর্য’২১ এবং কলম যাদুঘর তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। ব্যবহৃত কলম জমা রেখে কলমের কারুকার্যে সম্মিলিতভাবে কলমের ব্যতিক্রমী নিদর্শন গড়ে তোলার জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments