নিউজবাংলা: ২২ নভেম্বর-রবিবার:
ঢাকা: ইসলামের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা হলো সাক্ষাৎ হলে সালাম বিনিময় করার পর হাত মিলানো এবং কুশল বিনিময় করা যাকে শরিয়তের পরিভাষায় মুসাফাহা বলা হয়।
এটা চর্চা করবে পুরুষ পুরুষের সাথে এবং নারী নারীর সাথে। তবে যে সকল নারীকে বিয়ে করা হারাম তাদের সাথে পুরুষরা হাত মেলাতে পারবে অথবা স্বামী-স্ত্রীর সাথে হাত মেলাতে পারবে।
কিন্তু যে সকল নারী পুরুষ একে অপরের জন্য মাহরাম নয় অর্থাৎ যাদের একজন আরেকজনকে বিয়ে করতে কোনো বাধা নেই, সে সকল প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর একে অপরের হাত ধরা অন্য কথায় মুসাফাহা করা ইসলামি শরিয়তে নিষিদ্ধ বা হারাম। কেননা এই হাত ধরাধরি পরবর্তীতে তাদেরকে এর চেয়ে বড় ও জঘন্য পাপ সংঘটনে উৎসাহিত করতে পারে। কারণ শয়তান মানুষের শিরা-উপশিরায় চলাচল করে। এজন্য ইসলাম বড় অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগে যে ছিদ্র পথ দিয়ে শয়তান প্রবেশ করতে পারে সে পথ চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
নবুয়তের ত্রয়োদশ বর্ষে মিনার জামরায়ে আকাবার ঘাঁটিতে ৭২ জন পুরুষ মহানবী (স) এর হাতে হাত রেখে বায়আত করলেন যে, তারা নিজেদের স্ত্রী ও সন্তানদের মতো মহানবী (স) কেও রক্ষা করবেন। পুরুষদের বায়আত শেষ হলে দু’জন মহিলা এগিয়ে আসলেন। এদের একজন হলেন উন্মে মানী আর অপরজন হলেন নাসিবা বিনতে কা’ব মাযিনিয়া (রা)। রাসূল (স) মৌখিকভাবে তাদের বায়আত নিলেন। রাসূল (স) কখনই কোনো পর নারীর সাথে করমর্দন করেননি। (সহিহ মুসলিম)।
হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে সকল মুমিন নারী হিজরত করলেন রাসূল (স) সূরা মুমতাহিনার ১০-১২ আয়াত অনুযায়ী তাদের পরীক্ষা করলেন। আয়েশা (রা) বলেন: যে রমণী সূরায় উল্লেখিত শর্তে রাজি হলেন রাসূল (স) তাকে বললেন: “আমি মৌখিকভাবে তোমার বায়আত নিলাম।” আল্লাহর কসম বায়‘আত গ্রহণের সময় কখনও রাসূল (স) এর হাত কোনো নারীর হাত স্পর্শ করেনি। (সহিহ বুখারি)
হযরত উমাইমা বিনতে রাকীকা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নারীগণের সাথে আমিও রাসূল (স) এর হাতে বায়আত করতে আসলাম। তিনি (স) আমাদের নিকট থেকে কুরআন অনুযায়ী বায়আত গ্রহণ করলেন যে, আমরা আল্লাহর সাথে কোনো কিছু শরীক করব না ৃ। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি কি আমাদের সাথে মুসাফাহা করবেন না? রাসূলুল্লাহ (স) বললেন: “আমি নারীদের সাথে মুসাফাহা করি না” (মুসনাদে আহমাদ, নাসাঈ, ইবন মাজাহ ও তিরমিযী)।
রাসূলুল্লাহ (স) মাসুম, শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিরাপদ ও পবিত্রচিত্ত হওয়া সত্ত্বেও বায়আত বা অন্য কোথাও নারীদের সাথে মুসাফাহা করেছেন বলে কোনো প্রমাণ নেই। এটা উম্মতের জন্য দিকনির্দেশনা। বায়আতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি যখন নারীদের সাথে হাত মিলাননি, তখন তার উম্মতের পুরুষদের জন্য কিভাবে নারীদের সাথে মুসাফাহা জায়েয হতে পারে যারা ফিতনার আশঙ্কা থেকে মুক্ত নন? যাদের কু-প্রবৃত্তি তাদের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে এবং শয়তান যাদেরকে কুমন্ত্রণা দিতে পারে।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments