নিউজবাংলা: ২৩ নভেম্বর-সোমবার:
নাহিদ রেজা, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হয়েছে ধান কাটা। ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের দাম আশানারুপ না পাওয়ায় হতাশায় রয়েছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচটি উপজেলায় আমন মৌসুমে এক লক্ষ ২৯ হাজার ৭শ ১৩ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে এক লক্ষ ৩৪ হাজার ৫ শ ২৮ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এর মধ্যে দেশীয় ও বিদেশি বিভিন্ন জাতের আমন ধানের চাষ হয়েছে। দেশীয় উদ্ভাবিত স্বল্প জীবন কালের ধান বিনা-৭, সুমন, স্বর্ন, ব্রি ধান ৩৩ ও বিভিন্ন প্রকার উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের চাষ হয়েছে। এ বছর ধান প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি ) ১২৫০-১৩০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের দাম অনেক কম বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এখনো কোনো অটো রাইস মিল বা সরকার ধান সংগ্রহ করছে না তাই বাজারের এই অবস্থা মনে করছেন কৃষকরা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন গ্রামের কৃষক আওয়াল বলেন, এবার ৪ বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের ধানের চাষ করেছি। কাটামারি কমবেশি শেষ। বিঘা প্রতি ২২-২৪ মণ হারে ফলন হয়েছে। ১২০০-১২৪০ টাকা দরে বস্তা বিক্রি করছি। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
আউলিয়াপুর ইউনিয়নের সুমন বলেন, ৫ বিঘায় গুটি স্বর্ণা ধানের আবাদ করেছিলাম। বিঘা প্রতি ধানের ফলন পেয়েছি ২১ মণ। আর খরচ হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার টাকা। ধান বেচে দেখা যাচ্ছে উৎপাদন খরচ আর ধান বিক্রির টাকা সমানে সমান। ধান বেচে কোনো লাভের মুখ দেখলাম না।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আকঁচা ইউনিয়ন এলাকার কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৩ একর জমিতে স্বর্ণ ধানের চাষ করেছি। শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে (খড়সহ ধান) শুকাতে দিয়েছি জমিতে। দিন কয়েক পরে ধান বাড়িতে নিয়ে যাব আর জমিতে আলুর চাষ করবো। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাজারে স্বর্ণ ধান প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি ) ১৩০০-১৩৬০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ধানের যে দাম আছে সে দামে ধান বিক্রি করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।
এবার চুক্তিবদ্ধ ও বর্গাচাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত। চুক্তিবদ্ধ ও বর্গাচাষিদের ধান কাটা ও মাড়াই শেষে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান অথবা সমপরিমাণ টাকা দিতে হয় গৃহস্থকে। এবার গৃহস্থের পাওনা মেটানোর পর নিজের পুঁজিই থাকছে না।
ঠাকুরগাঁও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান চাষিরা ভালো ফলন পেয়েছেন। বর্তমানে ধানের দাম কিছুটা কম হলেও কয়েকদিন পরে আশানারুপ দাম পাবো বলে আশা করছি।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments