নিউজবাংলা: ২৭ নভেম্বর-শুক্রবার:
ঢাকা: শর্তসাপেক্ষে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন আজ এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
একই সঙ্গে ভোটগ্রহণ ১৫ দিন পিছিয়ে পুনঃতফসিল, নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে বলেছে বিএনপি। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি ও নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ করার জন্য সারাদেশে গণগ্রেফতার বন্ধ, আটক নেতাদের মুক্তি, সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউএনও এবং ওসি বদলির দাবির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে কার্যকর ভূমিকা রাখার শর্ত দিয়েছে দলটি।
শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, দেশ ও জনগণের কথা বিবেচনা করে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসময় দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিভিন্ন নেতিবাচক দিকগুলোর সমালোচনা করে তিনি।
রিপন বলেন, ‘তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এমনিতেও জনগণের ভোটাধিকার সরকার হরণ করেছে। অপরদিকে জনগণ যখন কিছুটা ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়, তখনো সেই ভোটের মর্যাদাকে সরকার ভূলুণ্ঠিত ও পদদলিত করে। তারপরেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিদ্যমান প্রেক্ষাপটকে আমলে নিয়ে শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা এবং জনগণের ভোটাধিকার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য এই নির্বাচনে শর্তসাপেক্ষে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
রিপন বলেন, ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি ভোটার তালিকায় ৫০ লাখ নতুন ভোটার যোগ হবার কথা। ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ নির্বাচন হলে এসব নতুন ভোটাররা পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে না। ভোটগ্রহণ ১৫ দিন পিছিয়ে দেওয়া হলে এরা (নতুনরা) ভোট দিতে পারবে। এ ছাড়া নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে মনোনয়ন দেওয়া পর্যন্ত ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়কে অপ্রতুল মনে করে বিএনপি। যৌক্তিক কারণে এ সময় বাড়ানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি চিঠি পাঠাবে বলেও জানান রিপন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কোনো ভুঁইফোড় সংগঠনকে কার্ড না দেওয়ার দাবি জানানো হয়। আসাদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে এক জায়গা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এতে করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরকারদলীয় ক্যাডাররা হুমকি দিচ্ছেন। অনেক জায়গায় পাহারা বসানো হয়েছে। তাই একাধিক জায়গা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার বিধান রাখার শর্ত দিয়েছে দলটি। জনমত গঠন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম খুলে দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন আছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
দলটির পক্ষ থেকে আসাদুজ্জামান বলেন, কমিশনের জনবল থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। পৌর এলাকায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও নেতাদের অনুরোধে ইউএনও ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব এলাকায় ওসি ও ইউএনওদের রদবদল করতে হবে।
বিএনপি মনে করে সরকার জনগণকে কতটা তোয়াক্কা করে এই নির্বাচনে তার পরীক্ষা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হালিম, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments