Breaking News
  • চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পক্ষের সংঘর্ষ: এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা
  • ঠাকুরগাঁওয়ে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বরখাস্ত ৩
  • জানাযার পূর্বে মৃত ব্যক্তি জেগে উঠলেন!
  • বিশ্বনাথে দৌলতপুর যুবসংঘের অভিষেক ও প্রবাসীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
  • কলাপাড়ায় আমনের বাম্পার ফলন ॥ কৃষকের মুখে হাসি

ফাঁসি স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

নিউজবাংলা: ২০ নভেম্বর-শুক্রবার:

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড অবিলম্বে স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি এই দুইজনের মামলার ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পর্যালোচনারও’ দাবি জানিয়েছে।

 

যুদ্ধাপরাধের দায়ে মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আয়োজন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন তা স্থগিত করার দাবি জানাল নিউইয়র্ক ভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাটি। এর আগেও একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি, যার কড়া সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ সরকার।

গতকার বুধবার মুজাহিদ ও সা. কাদের চৌধুরীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর বৃহস্পতিবারই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর গতরাতেই দণ্ডিত দুজনকে রায় পড়ে শোনানো হয়েছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ’র এশীয় পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে যে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বিচারে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মানদণ্ড বজায় রাখাটাও দরকার।’

‘অস্বচ্ছ বিচারে প্রকৃত ন্যায়বিচার হয় না, বিশেষ করে যখন মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা হয়,’ বলেন অ্যাডামস। বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড আগের মামলাগুলোর মতই ‘বিরক্তিকর ধরণ’ থেকে উদ্ভূত। যেমন ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে ‘তড়িঘড়ি করে’ ভূতাপেক্ষ আইন দ্বারা ফাঁসি দেয়া হয়, যা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ।

অন্য একজন অভিযুক্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে (সুখরঞ্জন বালী) সরকারি বাহিনী অপহরণ করেছে বলে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ২০১৫ সালের এপ্রিলে ফাঁসি দেয়া হলেও তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্যে ‘গড়মিল’ ছিল। তবে তা আমলে নেয়া হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচারেও একই অভিযোগ রয়েছে। মুজাহিদের পক্ষে ১৫০০ সাক্ষীর আবেদন করা হলেও ‘অযৌক্তিকভাবে’ মাত্র তিনজনকে সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

মুজাহিদ তার অধীনস্তদের অপরাধের উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হলেও অধীনস্ত কাউকেই আদালতে হাজির করা হয়নি। তার রিভিউ পিটিশন শুনানির আগ মুহূর্তে তার একজন আইনজীবীর বাসায় তল্লাশি চালানো হলে তিনি আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন। তার অন্য একজন আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলায় তার বিরুদ্ধে যেস্থানে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে তখন তিনি সেখানে ছিলেন না (চট্টগ্রামে হত্যার অভিযোগ আনা হলেও তিনি তখন পাকিস্তানে ছিলেন বলে দাবি করা হয়) বলে তিনি ‘সন্দেহাতীত দাবি’ করলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি ৪১ জন সাক্ষীর আবেদন করলেও গ্রহণ করা হয় মাত্র ৪ জনের সাক্ষী।

তার পক্ষে পাকিস্তানের কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক সাক্ষ্য দিতে চাইলেও তাদের বাংলাদেশ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল কভন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস অনুসারে কোনো অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যেসব অবস্থায় সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে তার পক্ষেও অনুরূপ ক্ষেত্রে সাক্ষ্য নিতে হবে। বাংলাদেশও এই সনদে স্বাক্ষর করেছে।

ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘ন্যায়বিচারের মৌলনীতি হলো রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষকে সমান চোখে দেখা কিন্তু আইসিটি (যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল) এই নীতি নিয়মিতভাবে অগ্রাহ্য করেছে, যাতে মনে হয়েছে তারা অভিযুক্তদের দণ্ড দিতেই উদগ্রীব।’

‘সব মামলাতেই অভিযুক্তদের সাক্ষীদের একাংশেকে সাক্ষ্য দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে, তাদের আইনজীবীদের নিয়মিত হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে, আসামি পক্ষের সাক্ষীরাদের শারীরিক হুমকি দেয়া হয়েছে এবং সাক্ষীরা সাক্ষী দিতে দেশে আসার অনুমতি পাননি,’ অভিযোগ করেন অ্যাডামস।

বিবৃতিতে আইসিটি আইনের সংশোধনের আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক সাবেক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন র‌্যাপ ন্যায়বিচারের জন্য আইন সংশোধনে বাংলাদেশ সরকারকে দীর্ঘদিন পরামর্শ দিয়ে আসলেও চলতি সপ্তাহে তিনি মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ে ‘অবিচার’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারপতি ও একজন প্রবাসী আইনজীবীর মধ্যকার কথোপকথন ফাঁস বেশিরভাগ বিচারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

অ্যাডামস বলেন, ‘স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়কার নৃশংসতার বিচার বাংলাদেশিরা চাচ্ছেন যথাযথভাবেই। কিন্তু বিচারের জন্য দরকার স্বচ্ছতা এবং সর্বোচ্চ মান ধরে রাখা, বিশেষ করে যখন কারো জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।’

 

নিউজবাংলা/একে

Share This:

Comments

comments

Previous: মেসির লাল কার্ড!
Next: সাকার কবর প্রস্তুত করতে বলেছেন স্ত্রী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*