নিউজবাংলা: ২০নভেম্বর-শুক্রবার:
ঢাকা: বিয়ে করাই সাথীর নেশা ও পেশা! নিজের সৌন্দর্যকে পুঁজি করে একের পর এক বিয়ের ফাঁদে ফেলে সহজ সরল তরুণদের। সব কিছু হাতিয়ে নেয়াই তার প্রধান কাজ। আর এই কাজ করতে গিয়ে সে কখনও সাথী আবার কথনও চন্দনা নাম ধারণ করছে।
ভুয়া পরিচয়ে বিয়ে নামক অস্ত্র প্রয়োগ করে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন তরুণের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ এই তরুণীর বিরুদ্ধে। সর্বশেষ সুবর্ণা নাহার সাথীর প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারানোর পথে মুহিব্বুল ইসলাম শাওন নামের এক যুবক।
প্রেমের অভিনয়ের পর দশ লাখ টাকা দেনমোহরে শাওনের সঙ্গে সাথীর বিয়ে হয় সম্প্রতি। কিন্তু বিয়ের তিনদিন পরই শাওনের কাছে ডিভোর্স চায় সাথী।এরপর ধীরে ধীরে বের হতে থাকে সাথী নামের এই তরুণীর প্রতারণার ছক।
প্রতারণার শিকার শাওন জানান, অল্পদিনের পরিচয়। এরপর আমাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে সে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমিও সরল বিশ্বাসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে ৫ নং শেখেরটেক কাজি অফিসে গিয়ে গত ২৩ অক্টোবর তাকে বিয়ে করি। এ সময় নগদ এবং গয়না বাবদ দেনমোহরের ৫ লাখ টাকা তাকে পরিশোধ করি। আমাদের দাম্পত্য জীবনের মাত্র তিন দিনের মাথায় সে আমার কাছে ডিভোর্স দাবি করে। পরে তার আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমি তার সঙ্গে পৃথক থাকার সিদ্ধান্ত নেই।এরমধ্যে তার দেয়া স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তার বর্ণনা অনুযায়ী ওই ঠিকানায় কেউ থাকে না।
পরে আদাবর থানায় জিডি করেন শাওন। জিডি নং-৬২২। পরে গত রবিবার রাতে ওই থানার এসআই রনজিত সমঝোতার জন্য সাথী এবং শাওনকে থানায় নিয়ে আসে। সেখানেই সাথীর সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়।
বিয়ের আগে নিজেকে ঢাকা মেডিকেলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী পরিচয় দিলেও প্রতিবেদকে সাথী উচ্চ মাধ্যমিক পাস বলে জানায়। কোন কলেজ থেকে পাস করেছেন জানতে চাইলে তারও কোন উত্তর দিতে পারেনি সে।
এ সময় এসআই রনজিত জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ মেটানোর জন্য তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরে তার মধ্যস্ততায় দুইজনকে দুইজনের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
এদিকে, মেয়ের সর্বশেষ দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী তার নাম সুবর্ণা নাহার সাথী, পিতা-সিরাজুল ইসলাম, মাতা-জোছনা বেগম। গ্রাম : চুড়ামনকাটি, ডাকঘর : চুড়ামনকাটি, উপজেলা: যশোর সদর, জেলা: যশোর। তবে ৭নং চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. শুকুর আলী সাথীর বর্ণনা অনুযায়ী ওই নামের কেউ এই ঠিকানায় থাকে না বলে প্রত্যায়নপত্র দিয়েছেন।
এদিকে, শাওন সোমবার সকালে সাথীকে নিয়ে আবারো আদাবর থানায় আসেন। পরে এসআই রনজিতকে সাথী জানান মিরপুরে তার ফুফু আছেন সেখানে যাবেন। শাওন পুলিশের কথা মতো সাথীকে নিয়ে মিরপুরে গেলে ১০ নম্বর গোলচত্বরে পৌঁছে শাওনের মোবাইল নিয়ে কৌশলে কেটে পরে সাথী। পরে এ বিষয়ে শাওন সন্ধ্যায় মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, এর আগেও সাথী ভিন্ন পরিচয়ে একাধিকবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে। আবার কয়েকদিন পর ডিভোর্স চেয়েছে। অন্যথায় দেনমোহরের টাকা দাবি করার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাথীর প্রতারণার শিকার একজন বলেন, একই ভাবে এই মেয়ে আমাকে ফাঁদে ফেলেছিল। তবে মানসম্মানের ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলিনি। এমনকি থানায়ও যায়নি।
নিউজবাংলা/একে:
Comments
comments