নিউজবাংলা: ২৫ নভেম্বর-বুধবার:
ঢাকা: এল ক্লাসিকোয়’ মাঠে নেমেছিলেন ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। তবে মঙ্গলবার রাতে রোমার বিপক্ষে শুরুর একাদশেই মাঠে নামলেন লিওনেল মেসি। দুই মাস আর দশ ম্যাচ পর বার্সেলোনার শুরুর একাদশে আর্জেন্টাইন মহাতারকা। চোটের কারণে দীর্ঘ সময় পর একাদশে ফিরেও নিজেকে চেনা রূপেই মেলে ধরলেন ফুটবলের খুদে জাদুকর। তার সঙ্গে দারুণ ছন্দে থাকা নেইমার আর লুইস সুয়ারেজ দেখালেন তাদের ক্যারিশমা। আর তাতে বার্সেলোনার কাছে একরকম উড়ে গেল রোমা।
চ্যাম্পিয়নস লিগে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লুইস এনরিকের দল। মেসি ও সুয়ারেজ- দুজনই করেছেন জোড়া গোল। পিকে আর আদ্রিয়ানো একটি করে। নেইমার গোল না পেলেও সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোয় দারুণ ভূমিকা রেখেছেন।
ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে রোমার বিপক্ষে চার ম্যাচে এটাই বার্সার প্রথম জয়। এই জয়ে ‘ই’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন (৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট) হয়েই চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় পা রেখেছে বার্সা। অবশ্য রাতে আগের ম্যাচে বায়ের লেভারকুসেন বাতের সঙ্গে ড্র করার পরই শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত হয়ে যায় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে ম্যাচের শুরু থেকেই রোমাকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। চতুর্থ মিনিটে রোমার গোলমুখে শট নেন মেসি। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে জোরালো শটটি ঠেকিয়ে দেন অতিথি গোলরক্ষক।
তিন মিনিট পর নেইমারের পাস থেকে রোমার জালে বলও জড়িয়েছিলেন মেসি। তবে তার আগেই অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। দুই মিনিট পর বক্সের সামনে থেকে মেসির আরেকটি শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
এরপর ১৫ মিনিটে বার্সাকে এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। গোলদাতা সুয়ারেজ হলেও এই গোলে দারুণ অবদান ছিল দুই ব্রাজিলিয়ান নেইমার ও দানি আলভেসের।
নেইমার মাঝমাঠের কাছ থেকে লম্বা ক্রস দেন আলভেসকে। এই ডিফেন্ডার রোমার এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে পাস দেন বাঁ দিকে ফাঁকায় দাঁড়ানো সুয়ারেজকে। ফাঁকা জালে বল জড়াতে কোনো ভুল করেননি উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার।
তিন মিনিট পরেই বার্সার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। আর মেসির গোলে সহায়তা করেন আগের গোলদাতা সুয়ারেজ। বক্সের ভেতর মেসিকে পাস দেন তিনি। দারুণ ফ্লিকে রোমার গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন ফুটবলের খুদে জাদুকর।
রোমা প্রথমবার ভালো একটি সুযোগ তৈরি করে ম্যাচের ৪১ মিনিটে। ফ্রি-কিক থেকে আসা বল বক্সের ভেতরে পেয়ে যান পিজানিচ, শটও নিয়েছিলেন তিনি। তবে তার শট ঠেকিয়ে দেন বার্সার জার্মান গোলরক্ষক টের স্টেগেন।
তিন মিনিট পরই অসাধারণ এক গোলে স্কোরলাইন ৩-০ করেন সুয়ারেজ। পোষ্টের সামনে থেকে হেডে বল ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন রোমার এক খেলোয়াড়। তবে বল পেয়ে যান বক্সের ভেতরেই দাঁড়ানো সুয়ারেজ। হেড থেকে আসা বলেই সরাসরি নেন জোরালো শট। চোখের পলকে বল জড়িয়ে যায় জালে। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা ন্যু ক্যাম্প।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটে নেইমারও গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। বক্সের সামনে থেকে আচমকা জোরালো এক শট নেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড। পোস্টের কোনাকুনি দিয়ে জালে ঢুকতে যাওয়া বলটি লাফিয়ে উঠে ঠেকিয়ে দেন রোমার গোলরক্ষক।
৫৪ মিনিটে দুর্দান্ত এক সেভ করে রোমাকে গোলবঞ্চিত করেন স্টেগেন। দুই মিনিট পরই পিকের গোলে বার্সাই ব্যবধান বাড়ায়। বক্সের ভেতর মেসির পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন পিকে। বার্সা এগিয়ে যায় ৪-০ গোলে।
৫৯ মিনিটে নিজের জোড়া গোলে স্কোরলাইন ৫-০ করে ফেলেন মেসি। এই গোলেও দারুণ অবদান নেইমারের। বাঁ দিক থেকে রোমার দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে নেইমার বল দেন সুয়ারেজকে। সুয়ারেজ আবার বল বাড়ান মেসিকে। দারুণ ফিনিশিংয়ে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন চারবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার।
৬৮ মিনিটে গোলের আরেকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন নেইমার। এবারও বাঁ দিক থেকে দুই অতিথি খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ফাঁকায় বল দিয়েছিলেন ব্রাজিল অধিনায়ক। কিন্তু সেখানে বার্সার কেউ না থাকায় গোল হয়নি।
দুই মিনিট পরেই আরেকটি আক্রমণ করেন নেইমার। এবার রোমার এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বক্সের সামনে থেকে নেইমার নিজেই শট নেন। তবে তার শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
৭৭ মিনিটে নিজেদের বক্সের ভেতর রোমার এক খেলোয়াড় নেইমারকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। নেইমার নিজেই পেনাল্টি কিক নিয়েছিলেন, কিন্তু গোল করতে পারেননি। তার শট ঠেকিয়ে দেন রোমার গোলরক্ষক। তবে ফিরতি বলে জোরালো শটে বল জালে জড়ান বার্সার আরেক ব্রাজিলিয়ান আদ্রিয়ানো। স্কোরলাইন হয়ে যায় ৬-০।
৮২ মিনিটে রোমাও একটি পেনাল্টি পায়। তবে দুর্দান্তভাবে পেনাল্টি সেভ করেন স্টেগেন। রোমার এডেন জেকোর শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন বার্সার এই জার্মান গোলরক্ষক।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে রোমার হয়ে একটি গোল শোধ করেন পেনাল্টি মিস করা জেকো। তবে বড় পরাজয় নিয়েই ন্যু ক্যাম্প ছাড়তে হয় অতিথিদের।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments