Breaking News

মহররম অফুরন্ত বরকত ও তাত্পর্যমণ্ডিত

নিউজবাংলা: ১৭ অক্টোবর, শনিবার:
ঢাকা: হিজরি সাল বা আরবি নববর্ষের প্রথম মাস মহররম অফুরন্ত বরকত ও তাত্পর্যমণ্ডিত। ‘মহররম’ শব্দের অর্থ অলঙ্ঘনীয় পবিত্র। ইসলামে মহররম মাসটি অত্যন্ত ফজিলতময় ও মর্যাদাপূর্ণ।

 

এ মাসেই বহু নবী-রাসুল ঈমানের কঠিন পরীক্ষার মাধ্যমে মুক্তি ও নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন। অসংখ্য তথ্যবহুল ঐতিহাসিক ঘটনা এ মাসে সংঘটিত হয়েছিল। পবিত্র আশুরার সঙ্গে পুরো মহররম মাসের বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা চারটি মাসে সব ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ হারাম ঘোষণা করেছেন; এগুলোকে অলঙ্ঘনীয় পবিত্র মাস বলা হয়। আল্লাহ তাআলার ঘোষণা অনুযায়ী যেসব মাসে ঝগড়া-বিবাদ, যুদ্ধবিগ্রহ একেবারে নিষিদ্ধ, সেই সম্মানিত চারটি মাসের অন্যতম এই মহররম মাস। অন্য তিনটি মাস হলো—রজব, জিলকদ ও জিলহজ। এ মাসগুলোতে যুদ্ধ করা মহাপাপ। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে আল্লাহর কাছে মাস গণনায় মাস ১২টি, তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত, এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’
প্রাচীনকালে আরব দেশে চারটি মাস পবিত্র হিসেবে বিবেচিত হতো। এ মাসগুলোতে আরবে যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি, মারামারি, লুটতরাজ প্রভৃতি থেকে বিরত থাকার নিয়ম প্রচলিত ছিল। একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরার তাত্পর্য বর্ণনাকালে সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন, ‘তবে কি আল্লাহ তাআলা ওই দিনটিকে সব দিনের চেয়ে অধিক মর্যাদা দিয়েছেন? নবী করিম (সা.) জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ!’ এরপর তিনি ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা আসমান, জমিন, লওহ কলম, সাগর, পর্বত এই দিনে সৃষ্টি করেছেন।’

রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার আগে পবিত্র আশুরার দিনে রোজা রাখা ফরজ ছিল। পরে তা রহিত করে মাহে রমজানের রোজা ফরজ করা হয়। এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আশুরার দিনে হজরত আদম (আ.)-এর ওপর ও অন্যান্য নবীর ওপর রোজা ফরজ ছিল। এ দিন দুই হাজার পয়গম্বর ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন এবং দুই হাজার পয়গম্বরের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছিল।’ (রযিন) নবী করিম (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার রোজা রাখে, তার আমলনামায় সাত আসমান-জমিনের সব অধিবাসীর সওয়াব লেখা হয় এবং যে ব্যক্তি নিজের জন্য দোজখের আগুন হারাম করতে চায়, সে যেন মহররম মাসের নফল রোজা রাখে।’ অন্য এক হাদিস থেকে জানা যায়, ‘মহররম মাসে যদি কোনো ব্যক্তি রোজা রাখে, তবে প্রতিটি রোজার পরিবর্তে ৩০ রোজার পুণ্য লাভ করবে।’

প্রকৃতপক্ষে মহররম মাসটি ইবাদত-বন্দেগির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আশুরার দিনে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে জান্নাত লাভ থেকে শুরু করে সওয়াব হাসিলের আরও অসংখ্য সুযোগ রয়েছে। এদিন যদি কোনো মুসলমানকে পেটপুরে আহার করান, তবে তিনি নবী করিম (সা.)-এর সব উম্মতকে পেটপুরে আহার করানোর সমান সওয়াব পাবেন। এ পবিত্র মাসের সম্মান প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘যে ব্যক্তি মহররম মাসের সম্মান করবে, আল্লাহ তাকে বেহেশতে সন্মানিত করবেন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্ত রাখবেন।’
নিউজবাংলা/একে

Next: কাদের সিদ্দিকীর আপিল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*