Breaking News

সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে

নিউজবাংলা: ১৭ অক্টোবর, শনিবার:

ঢাকা: ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেবার মান নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু তার পরিবর্তে যদি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করা হয় তবে পরিস্থিতি কতটা উৎকণ্ঠার হতে পারে বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, সিএনজিচালিত বাস ও মিনিবাসের নতুন ভাড়া কার্যকরের প্রথম দিন সরকারের বেঁধে দেওয়া হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আর এমন অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা; এ ছাড়া অনেক বাসে নতুন ভাড়ার তালিকাও পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা। আর মিনিবাসের ভাড়া ১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে ১ টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে। কিন্তু এখন যদি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বেশি আদায় করা হয়, তবে সঙ্গত কারণেই তা রোধ করতে সরকারকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এর আগে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশিষ্টজনরা এমনটা বলেছিলেন, ভাড়া বৃদ্ধির প্রভাব জনজীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করবে।

এখন প্রথম দিনেই তা পরিলক্ষিত হলো। সন্দেহাতীতভাবেই বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা সরকারকে বলতে চাই, এটা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, অতীতে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নানা রকম অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমনও ঘটেছে, কোনো কোনো গণপরিবহন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জিম্মি করে সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বেশি হারে ভাড়া আদায় করেছে; যার ফলে ভাড়া বৃদ্ধি হলেও সেবার সার্বিক মান প্রশ্নবিদ্ধ থেকে গেছে। ফলে এখন যখন আবারো ভাড়া বৃদ্ধির ফলে নির্ধারিত হারের চেয়েও বেশি আদায় করার বিষয়টি সামনে আসছে, তখন তা সেবা তো দূরের কথা এরকম হলে জনভোগান্তি বাড়বে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ফলে আমরা মনে করি, ভাড়াসংক্রান্ত যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।

এই বাস্তবতা অস্বীকার করা যাবে না, এই দেশের বেশিরভাগ মানুষই অভাব-অনটনকে মোকাবেলা করেই জীবনযাপন করে। ফলে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি যেখানে উৎকণ্ঠাজনক, সেখানে যদি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করা হয় তবে পরিস্থিতি কতটা দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে, তা সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখতে হবে। আমরা বলতে চাই, শুধু রাজধানীতেই এ রকম অনেক বাস সার্ভিস আছে যেগুলোর কর্তৃপক্ষ ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করে এমন অভিযোগও আছে। এমনকি সিটিং সার্ভিসের কথা বলে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা, বেশি হারে ভাড়া আদায়ের মতো অভিযোগও নতুন নয়। সঙ্গত কারণেই গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করা এবং সেবার মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সার্বিক পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে যথাযথ মনিটরিং এবং নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় হলে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

সর্বোপরি আমরা সরকারকে বলতে চাই, ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেবার মান যেন নিশ্চিত হয় তার জন্য কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার পাশাপাশি, পরিবহনের চালকদের বাড়তি ভাড়া আদায় এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সমীচীন। যখন জীবনযাত্রার সামগ্রিক ব্যয় বাড়ছে, তখন সাধারণ মানুষ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের কাছে জিম্মি হলে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আমরা প্রত্যাশা করি, বাড়তি ভাড়া আদায়সসহ উদ্ভূত যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে জনভোগান্তি দূর করতে সরকার কোনো প্রকার ছাড় দেবে না। একই সঙ্গে দক্ষ চালক সংকট এবং গণপরিবহনের খুবই নিম্নমানের সেবা নিয়ে যাত্রীদের যে দীর্ঘদিনের অভিযোগ আছে, তা খতিয়ে দেখে সরকার কাযর্কর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

নিউজবাংলা/একে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*