নিউজবাংলা-১৪ নভেম্বর,শনিবার
ঢাকা: রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন পণ্যের সমাহার লক্ষ করা গেলেও গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ হয়েছে।
গত সপ্তাহে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন কেজিপ্রতি গুণতে হচ্ছে ৮০ টাকা। বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে নতুন আলু। কিন্তু দাম আকাশছোঁয়া। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। এ ছাড়া বেড়েছে টমেটো ও পুরনো গোল আলুর দাম।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে এমনটিই জানা গেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, স্বামীবাগ, কাপ্তানবাজার, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় (গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা), সাদা গোল বেগুন ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, মরিচ ৮০ টাকায় (গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকায়), গাজর ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, শসা ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, করলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, ঝিঙে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, কাকরোল ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, উচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, জলপাই ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, ধুন্দুল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় (গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা), বরবটি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, কচুর ছড়ি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, লতি ৩০ ৩৫ টাকায় (গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায়) বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে টমেটোর দাম বেড়েছে। মানভেদে প্রতিকেজি টমেটো ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাক। এদিকে বাজারে সাদা গোল আলুর দামও বেড়েছে। শুক্রবার প্রতিকেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে আলু দাম বিক্রি হয়েছে ২৪ টাকা থেকে ২৮ টাকায়। লাল গোল আলু ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিটি বড় লাউ ৪০ টাকা এবং ছোট লাউ ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ছোট কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং বড় কুমড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, বাজারে পণ্যের দর আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে। তবে কিছু পণ্য শীতকালে সংকট থাকে বলে এগুলোর দাম সামান্য বেড়েছে।
কাপ্তান বাজারের কাঁচাপন্যের ব্যবসায়ী ওসমান মিয়া জানান, শীতে পেঁপে উৎপাদন কম হয়। তাই পেঁপের দাম কমবে না। এ ছাড়া শুক্রবার আড়তে আলু, টমেটো, বেগুন, কাঁচামরিচ এগুলোর দাম আগের সপ্তাহের চেয়ে সামান্য বেশি। তাই খুচরা বাজারেও দাম সামান্য বেড়েছে।
এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, শীতকালীন পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। কারণ এসব পণ্য বাজারে পর্যাপ্ত আসছে। তা ছাড়া যেসব পণ্য বাজারে আমদানি সামান্য কম সেগুলোর দাম সামান্য বাড়তি।
এদিকে বাজারে ভারতীয় পেয়াজের দাম আরেক দফা কমেছে। মানভেদে প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া মানভেদে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে রসুনের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতিকেজি দেশি রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুন গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া আদার দামও সামান্য কমেছে। প্রতিকেজি আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে বাজারে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি হালি ব্রয়লার মুরগির ডিম ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি হাঁসের ডিম ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে ব্রয়লার মুরগির একশ ডিম ৭৫০ টাকায় এবং হাঁসের ডিম ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম (সাদা) ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, ব্রয়লার মুরগি (লাল) ১৭০ টাকা থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে চালের বাজার গত সপ্তাহের চেয়ে বাড়েনি। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৪২ থেকে ৪৩ টাকায়,নাজিরশাইল ৪৭ টাকা থেকে ৪৮ টাকায়,মোটা চাল ৩০ টাকা থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী পাইকারি কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের নেতা নুরু হাজী বলেন, ‘বাজারে শীতকালিন পন্য আমদানি বাড়লেও কিছু পণ্য সংকট আছে, সেগুলোর দাম সামান্য বেশি। তবে পাইকারি বাজারে ১ টাকা বাড়লে খুচরা ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করে। এটা তাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। যেমন শুক্রবার আড়তে টমেটো ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হয়েছে। অথচ খুচরা বাজারে তারা ১২০ টাকা বিক্রি করেছে।’
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments