নিউজবাংলা:৭ জুলাই, বৃহ.বার:
ঢাকা : রোনালদো সবার আগে ফাইনালের দরজায় দাঁড়িয়ে পড়েছেন। জার্মানি অথবা ফ্রান্সের জন্য এখন অপেক্ষা তার। আজ রাতে ফয়সালা হয়ে যাবে কে হচ্ছে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ।
অনেকেই বলছেন দ্বিতীয় সেমিফাইনালই হবে অলিখিত ফাইনাল। যারা জিতবে তাদের কাছে পাত্তা পাবে না রোনালদোরা। কিন্তু প্রথম সেমিফাইনালের চিত্র বলছে, ভয়ঙ্কর ফর্মে আছেন রোনালদো। একাই বদলে দিতে পারেন ম্যাচ। মেসি যা পারেননি, সেই কাজটুকু তিনি নিশ্চয়ই করে দেখাতে চাইবেন। তার আগে অবশ্য তাকে জানতে হবে যুদ্ধের ময়দানে কাদের সামনে পাচ্ছেন।
আজ রাতের গুরুত্বপূর্ণ এই যুদ্ধের হিসাব-নিকাশ বলছে জার্মানি-ফ্রান্স কেউ কারো থেকে কম নয়। ফ্রান্সের অ্যাটাকিং লাইনে জিরু, গ্রিজম্যান, পায়েট, পগবাদের এখন ঝকঝকে দেখাচ্ছে। গোলের পর গোল করছেন। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই ফরাসি আক্রমণকে জার্মান ডিফেন্স কব্জা করতে পারবে কি? সম্ভাবনা বলছে পারবে।
গ্রিজম্যান বা পায়েট মূলত পিছন থেকে উঠে আক্রমণে ভিড় বাড়ান। যেটা জার্মানদের বিরুদ্ধে করা কঠিন হয়ে পড়বে। সবাই পায়েটদের কড়া ম্যান মার্কিংয়ে রাখবেনই। ওপেন স্পেস সে অর্থে দেবেন না। যেটা কোয়ার্টার ফাইনালে পাঁচ গোল করার ম্যাচে পুরোদমে পেয়েছে ফরাসিরা।
বাংলাদেশ সময় রাত একটার এই ম্যাচে সোয়াইনস্টাইগার খেললেও খেলতে পারেন। কারণ ইতালি ম্যাচ হয়ে গেছে শনিবার। তার পর জার্মান মেডিক্যাল টিম হাতে পাচ্ছে পাঁচ-পাঁচটা দিন। এই পর্যায়ের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অত্যাধুনিক ফিজিও টিম নিশ্চয়ই সোয়াইনস্টাইগারের পেশির চোট সারিয়ে তুলবেন। মিডফিল্ডে টনি ক্রুজের পাশে যদি সোয়াইনস্টাইগার থাকে তা হলে কিন্তু জিরুদের সামনে ওপেন স্পেস বন্ধ হয়ে গেল প্রায়।
জিরু মাঝমাঠ থেকে বল তৈরি করে নিয়ে আসতে সে ভাবে দক্ষ নন। সেটা সোয়াইনস্টাইগার মাঠে থাকলে আরও আটকে যাবেন। যদি সোয়াইনস্টাইগার না থাকেন তা হলেও। সেক্ষেত্রে জুলিয়েন ওয়েইলকে খেলাতে পারেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লো। বরুসিয়া ডর্টমুন্ড মিডিও বিখ্যাত কড়া ট্যাকল আর কভারিংয়ের জন্য। আর কড়া মার্কিংয়ের সামনে ছন্দ হারালে জিরু ম্যাচ থেকে যে হারিয়ে যান সেটা ইপিএলেই দেখা গেছে।
জার্মান ডিফেন্সে হুমেলস না খেললেও মুস্তাফি থাকবেন বোয়েটেংয়ের পাশে। ফলে দলটির ব্যাক ফোর খুব বেশি নড়বড় করবে ভাবলে ভুল ভাবা হবে। ইতালি ম্যাচে পেনাল্টিতে ১-১ হওয়া বাদ দিলে ইউরোয় কিন্তু জার্মানি ওপেন অ্যাটাকে এখনও গোল খায়নি। যার পিছনে বোয়েটেংদের কড়া ম্যান মার্কিং আর কভারিং। ফলে মাঝমাঠ টপকে যদি পায়েট, গ্রিজম্যানরা উঠেও আসেন, তা হলে জার্মান ব্যাক ফোর তাদের খুব বেশি সুযোগ দেবে না।
ফ্রান্স আগের সব ম্যাচ ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলার পর কোয়ার্টার ফাইনালে হঠাৎই ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেলে। এটা জার্মানি ম্যাচের কথা ভেবেই দেশমের স্টেজ রিহার্সাল হতে পারে। কিন্তু এই ছকে আবার ফরাসি অ্যাটাকিং লাইনে একা পড়ে যাবেন জিরু। জার্মানদের ধাক্কাধাক্কির ফুটবলের সঙ্গে তিনি একা কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
এর সঙ্গে আবার বারের নিচে থাকছেন ম্যানুয়েল ন্যয়ার। ফলে জার্মান ডিফেন্স কখনই একজন হুমেলসের অভাবে ভুগবে বলে মনে হয় না। ন্যয়ার তো নিজেই একজন বাড়তি ডিফেন্ডারের কাজ করে দেন জার্মানি দলে।
গোটজের ওপর আজ ভরসা রাখলেও রাখতে পারেন লো। গোমেজকে না পাওয়া মানে ধরে নেওয়া যায় গোটজে প্রথম দলে ঢুকছে। সঙ্গে কিমিচ। যারা বিপক্ষ ডিফেন্সে ভয়ঙ্কর সব ক্রস পাঠাতে ওস্তাদ। আর সেই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের অ্যাটাকিং লাইনের পায়েট-গ্রিজম্যানরা নিজেদের ডিফেন্সকে কভার দিতে নিচে নামবে। নামতে হবেই। সব মিলিয়ে ওই জার্মানিকে আটকাতে বেগ পেতেই হবে স্বাগতিকদের।
নিউজবাংলা/ একে
Comments
comments