Breaking News
  • নাটোরে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুনামেন্টের সেমিফাইনালে উঠল অর্থনীতি ও ইসলামে ইতিহাস বিভাগ
  • বিশ্বনাথে কলেজ ছাত্রের উপর হামলা ও বিষ পান করিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
  • বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আ’লীগ নেতাকে সংবর্ধনা
  • রাজাপুরে তিন গাঁজা সেবিকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা
  • রাজাপুরে জেএসসি পরীক্ষার্থীর খাতা ছিঁড়ে ফেলল শিক্ষক !

আজ ৮ম বার্ষিকী কলাপাড়ার মানুষ আজও ভুলেনি সিডরের সেই ভয়াবহ তান্ডব

নিউজবাংলা- ১৪ নভেম্বর,শনিবার:

মো.ইমরান, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥

সুপার স্ইাক্লোন সিডরের ভয়াবহতার কথা স্মরন করে আজও আঁতকে ওঠেন পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মানুষ।

প্রকৃতি যে মানুষের ওপর এতটা নিষ্ঠুর আচরন করতে পারে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডর তার উৎকৃষ্ট উদাহরন। আজকের এই দিনে দেশের উপকূলীয় এলাকার ১২টি জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডর শুধু মানবকুলের অস্তিত্বই ধ্বংস করে নি, ধ্বংস স্তুপে পরিনত করেছে গোটা উপকূলীয় এলাকার বিস্তীর্ণ জনপথ। প্রকৃতির নিষ্ঠুর আঘাতে সে দিন অসংখ্য প্রানহানীসহ বহু স্থাপনা, রাস্তাঘাট, পশু-পাখি, জীবজন্তু, গাছপালা সবকিছু মাটির সঙ্গে মিশে যায়। ওই একটি রাত তছনছ করে দেয় অনেকের সাজানো সংসার । অনেকের লালিত স্বপ্ন। কোনদিন ওই স্মৃতির কথা ভুলতেও পারবেনা। এ উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদ ঘুরলে এখনও স্বজন হারা ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের বিলাপ শোনা যায়। সিডরের ৮ বছর পূর্ণ হলেও বহু মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। সচল হয়নি অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য। কেউ কেউ অর্থাভাবে ফিরতে পারেনি নিজ পেশায়।
দিনটি ছিলো বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঝড়ের আলামত শুরূ হলেও রাত ১১টার দিকে প্রচন্ড বেগে কলাপাড়া উপজেলাসহ উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে সিডর। এ সময় ১০ থেকে ১২ ফুট সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে যায় বিস্তীর্ন এলাকা। এ সময় সরকারী ও বে-সরকারী সংস্থার পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, সিডরে কলাপাড়া উপজেলায় ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী হয়েছে ৯৬ জন। স্বামী হারা হয়েছে ১২ নারী। এতিম হয়েছে ২০ জন শিশু। নিখোঁজ হয়েছে সাত জেলে। এই উপজেলার মৃত গবাদি পশুর সংখ্যা চার হাজার নয়শত ৪৪টি। ক্ষতি হয়েছেপাঁচশত ৫৩টি নৌযানের। ১২ হাজার নয়শত ৭০টি পরিবার হয়েছে সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা ১৪ হাজার নয়শত ২৫টি।
কলাপাড়া উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের চর নজিব গ্রামের ইউসুফ মেকার (৫২)। বালিয়াতলী খেয়াঘাটে মেকারী করেন। তার ইতি (এক মাস) ও ইশিতা (৭) নামে দু’মেয়ে সিডরে মারা গেছে। কথা প্রসঙ্গে সে জানায়, ‘বছর ঘুইর‌্যা হেই দিন আইছে! মোনে পরে মাইয়্যা দুইডার কতা। এ্যাহনো আমরা ঠিক অইতে পারিনাই।’
লালুয়া ইউনিয়নের জেলে ইউনুস হাওলাদার (৫২) সিডরের দুই দিন আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। স্ত্রী সূর্য্য বানু (৫০) বলেন, ‘ পোলাপানগুলা এহনো ওর বাপেরে খোঁজে। হ্যার কতা মোনে অইলে চোহে পানি আইয়া পড়ে। জানিনা হে বাইচ্যা আছে কিনা ’ ওই ইউনিয়নের এমন আরও ছয়টি পরিবার স্বজন হারানোর বেদনায় পাগল প্রায়। ওইসব পরিবারগুলোর পুরুষ সদস্যরা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খাপড়াভাঙ্গা ইউনিয়নের নুরপুুর গ্রামের আঃ আউয়াল বয়াতি (৬০) বলেন, ‘বইন্যার রাইতের কতা মোনে অইলে এ্যাহনো গাও কাপে । হেই দিন কেয়ামত অইয়া গ্যাছে ’

নিউজবাংলা/একে

Share This:

Comments

comments

Previous: কলাপাড়ায় সিডর আইলা ও বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ২০৭০ কৃষককে বীজ ও সার বিতরন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*