নিউজবাংলা: ১৭ অক্টোবর, শনিবার:
ঢাকা: কটি জাতির সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার বিকল্প নেই। সঙ্গত কারণেই যদি দেশের শিক্ষা খাতে অস্তিরতা সৃষ্টি হয়, তা যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমাধান করা জরুরি। বলা বাহুল্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাঙ্গন। মেডিকেল কলেজ ভর্তিচ্ছুরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ এনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে, অন্যদিকে আন্দোলনের নামে শিক্ষাক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিবেশের উদ্ভব ঘটিয়ে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে প্রাথমিক শিক্ষকরাথ এমন অভিযোগে ‘কতিপয়’ শিক্ষকের জেলাভিত্তিক তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে সরকার। যদিও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনার পর আন্দোলন থেকে সরে দাবি পূরণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। গণশিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি বেতন বৈষম্য নিরসনসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উত্থাপন করার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জের ধরে মেডিকেল কলেজ বন্ধ হওয়ার মতোও ঘটনা ঘটেছে। যা সার্বিক অর্থে শিক্ষা খাতে নানামাত্রিক অস্থিরতারই ইঙ্গিতবাহী।
এটা সত্য যে, সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অবশ্যই গণতান্ত্রিক। কিন্তু আন্দোলনের নামে যেন কোনো প্রকার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা দরকার। একই সঙ্গে আমরা মনে করি, মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছুরা যখন পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে, সেটা আমলে নিয়ে সরকার বিষয়টি সমাধান করবে।
আর তা সুশিক্ষার যথাযথ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থেই জরুরি। এ ছাড়া শিক্ষকদের আন্দোলন ও কর্মবিরতির মতো ঘটনা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের পথকে বাধাগ্রস্ত করে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি তাদের দাবিকে সরকারও আন্তরিকভাবে দেখবে এমনটি সঙ্গত। সবারই এটা আমলে নেয়া প্রয়োজন, যেন শিক্ষার্থীরা ক্ষতির শিকার না হয়। নিশ্চিত করেই বলা যায়, দেশের শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে ক্লাস ও পরীক্ষার সময় পিছিয়ে যায়। যে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া কঠিন। বর্তমানে সার্বিক এই পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। যা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সরকার সমাধান করবে এমনটি প্রত্যাশিত।
আমরা মনে করি, শিক্ষা বিস্তারে এবং দেশের সর্বস্তরে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে সরকার সচেষ্ট। একই সঙ্গে উল্লেখ্য যে, সরকার বিভিন্ন সময়েই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যার ফলে শিক্ষা খাত এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটাও সত্য, যখন বিভিন্ন্নভাবে শিক্ষা খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে তখন তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠার। এ ছাড়া ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, প্রশ্নফাঁস, আন্দোলনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো মাঝেমধ্যে যেভাবে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে তা আশঙ্কাজনক।
আমরা সরকারকে বলতে চাই, এমন উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে যেন, সামগ্রিকভাবেই দেশের শিক্ষা খাত এগিয়ে যায়। মনে রাখা দরকার, শিক্ষা খাত বাধাগ্রস্ত হলে কোনো অর্জনই কাজে আসবে না। আমরা চাই, দেশের শিক্ষা পরিস্থিতিকে সরকার আন্তরিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে উদ্ভুত যেকোনো যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তা সমাধান করতে সরকার কোনো প্রকার দ্বিধা করবে না। একই সঙ্গে সরকার শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে যে পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করছে এবং সার্বিকভাবে শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছেথ তা বিভিন্ন সময়েই সংঘর্ষ, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে যাঁরা এই ধরনের অস্থিতিশীল কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রতি কোনো অনুকম্পা নয়, বরং প্রতিরোধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক এই দেশ, এমন প্রত্যাশা সবার।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments