নিউজবাংলা: ১৯ মার্চ, শনিবার:
ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিগত কয়েক বছরে সরকারের নজিরবিহীন দমননীতির কারণে আমাদের দলের প্রায় ৫০২ জন নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন।
একইসঙ্গে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যেতে দলীয় নেতা-কর্মী ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জাতির এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সকল দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী ও ব্যক্তির সমন্বয়ে ইস্পাত কঠিন জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি হিংসা, বিদ্বেষ, অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে বিশ্বাস করে না। অথচ, আমরা লক্ষ্য করছি, বর্তমান সরকারের আমলে দ্বিমত পোষণকারী ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ এখন প্রায় তিরোহিত।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, বিএনপি রণাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধার দল। এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিএনপি অনেক বেশি সংকল্পবদ্ধ, অনেক বেশি উদার রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী দল। আমরা একটি গণতান্ত্রিক দল ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমেই বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারকে পরাজিত করতে চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার আজ চরমভাবে লংঘিত। বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-, গুম খুন এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। বিনা বিচারে দীর্ঘকাল আটক রাখা এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনাসহ অন্য লোমহর্ষক ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থাকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে।
সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, বিগত কয়েক বছরে সরকারের নজিরবিহীন দমননীতির কারণে আমাদের দলের প্রায় ৫০২ জন শহীদ হয়েছেন, হয় পুলিশের গুলিতে অথবা সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হাতে। অপহৃত হয়েছেন প্রায় ২২৩ জন। গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ৪০০০ জন। বিভিন্ন সময়ে জেল খেটেছেন প্রায় ৭৫ হাজার জন। মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার এবং আসামি করা হয়েছে প্রায় ৪,৩০,০০০ জনকে। প্রকাশ্য গুলি করে ক্রসফায়ারের নাটক সাজানো হয়েছে, হাজার হাজার অজ্ঞাত নামা আসামি দিয়ে জুলুম চালিয়েছে নিরীহ গ্রামবাসীদের ওপর। রাজপথে শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরাসরি গুলি চালিয়েছে। অতি সম্প্রতি মিথ্যা মামলায় প্রায় ৫০জনকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের সাজা দেয়া হয়েছে। সরকার সারা দেশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন পেশার সদস্যদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করেন মির্জা ফখরুল।
এছাড়া ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ গুমের শিকার এবং বিএনপি ও ২০ দলের নেতা-কর্মীদের স্মরণ করেন তিনি, যারা জেল-জুলুম, হুলিয়া ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার মুখেও দৃঢ়চিত্তে জিয়াউর রহমানের প্রদর্শিত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে রেখেছেন।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments