নিউজবাংলা: ১৫ জুলাই, শুক্রবার:
ঢাকা : সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এবার আওয়াজ উঠলো মসজিদ থেকে। আজ শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ বেশির ভাগ মসজিদে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খুতবা দেয়া হয়েছে।
ইসলাম জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না, সন্ত্রাসের কোনো জায়গা ইসলামে নেই এই বিষয়ে বিস্তারিত বয়ান করেন ইমাম-খতিবরা। এ ব্যাপারে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রতিটি মিম্বর থেকে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বয়ান করেন মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেমী। নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশের জন্য শান্তি কামনা করে দোয়াও করেন তিনি।
মহিউদ্দিন কাসেমী বয়ানে বলেন, ‘অশান্তি সৃষ্টির জন্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করা হচ্ছে। হামলাকারীরা সংখ্যায় কম, তাদের ভয়ে আমাদের পিছিয়ে থাকা যাবে না। সমাজের সবার সম্মিলতিভাবে এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।’
জাতীয় মসজিদ ছাড়াও রাজধানীর বেশির ভাগ মসজিদে আজ জঙ্গিবিরোধী খুতবা দেয়া হয়েছে। তবে কোনো কোনো মসজিদের খতিব অন্য বিষয়ে আলোচনা করেছেন। আবার কোনো কোনো মসজিদে বয়ানের পর ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে পাঠানো খুতবা পাঠ করে শোনানো হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল জানান, বায়তুল মোকাররম মসজিদে যে খুতবা পাঠ করা হয়েছে, সেটাই সারাদেশের সব মসজিদে পাঠানো হয়েছে। মসজিদের ইমামরা এই খুতবা হুবহু পাঠ করবেন অথবা এটার অনুসরনে খুতবা পাঠ করতে বলা হয়েছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান ইফাবা ডিজি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মসজিদের ইমামদের জন্য দুই পৃষ্ঠার খুতবা তৈরি করে দেয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এতে মুসল্লিদের প্রতি শান্তির ধর্ম ইসলামের নির্দেশনা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হয় এবং সন্তান-সন্তুতিদের বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়।
মসজিদের ইমামদের জন্য প্রস্তুতকৃত খুতবায় বলা হয়, ‘হে মুসলিমগণ! আপনারা আপনাদের সন্তান-সন্তুতির বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগী ও সাবধান থাকুন। তাদের সুন্দর চরিত্রের শিক্ষা দিন। তাদের বিষয়ে সজাগ থাকুন যেন আপনার চোখ ফাঁকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে কেড়ে নিতে না পারে। সন্ত্রাসীরা এই অবুঝ সরল কিশোরদের পরিবারের নিয়ন্ত্রণ থেকে ভাগিয়ে নিয়ে নানা অপকর্মের প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গি বানাতে চেষ্টা করে থাকে।’
খুতবার শেষ দিকে বলা হয়, ‘সব শেষে আমরা আহ্বান করি আমাদের সন্তানদের, আমাদের যুবকদের সব সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে। হে আল্লাহ! আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এ দেশকে আপনি সন্ত্রাস ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন। একে শান্তি ও সমৃদ্ধির দেশে পরিণত করুন।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা হয়। হামলাকারীদের বেশির ভাগই উচ্চ শিক্ষিত এবং ভালো পরিবারের সন্তান। এধরনের হামলা আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সরকার। এ ব্যাপারে দেশের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছে প্রশাসন। এর অংশ হিসেবেই মসজিদ থেকে জঙ্গিবাদবিরোধী বক্তব্যের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
নিউজবাংলা/ একে
Comments
comments