Breaking News
  • বাসাইলে সেলাই মেশিন বিতরণ
  • রাবিতে রকেট লাঞ্চার সদৃশ বস্তু উদ্ধার
  • শফিক রেহমানকে গ্রেফতার সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ: খালেদা জিয়া
  • ঝিনাইদহে বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী ‘ঝাপান খেলা’ অনুষ্ঠিত
  • ঝিনাইদহে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২

রাণীনগরে শুরু হয়েছে ইরি-বোরো ধান কাটা দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা !

নিউজবাংলা: ১৪ এপ্রিল,  বৃহস্পতিবার:

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা : নওগাঁর রাণীনগরে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কৃষকরা এবার ইরি-বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন। কিন্তু বর্তমান বাজারে ধানের দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এলাকার কৃষকরা। যদি কৃষকরা তাদের ধানের নায্য মূল্য না পান তাহলে উচ্চ হারে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে বলে আশংকা করছেন ।

 

এখন উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ধানের শীষের পাকা সোনালী রংয়ে ছেঁয়ে গেছে। যেদিকে দৃষ্টি যায় শুধু পাঁকা ধান আর ধান। মাঠের কোন কোন জায়গায় দেখা যাচ্ছে দিনমজুরিরা ধান কাটছে আবার কেউ কেউ সেই কাটা ধান কাঁধে করে নিয়ে আসছে কৃষকের বাড়িতে। গত আমন মৌসুমে ভয়াবহ বন্যায় অধিকাংশ আমন ধানের জমি তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ইরি-বোরো চাষের জন্য রাসায়নিক সার সহ কৃষি উপকরণ বিতরণের ফলে একটু আগাম সময়েই কৃষকরা ইরি-বোরো ধান চাষ করেছিলেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। এবার প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ২৫ মণ ও হাইব্রিড জাতের ৩২ মণ হারে ধানের ফলন পাওয়া যাবে যা বিগত দিনের চেয়ে অনেক বেশি। তবে মাঠের কিছু নিচু জমিতে ইউরিয়া সারের পরিমাণ বেশি দেওয়ায় সেগুলোতে ফলন একটু কম হবে। কয়েক সপ্তাহ আগে শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে জমিগুলোর ধান পড়ে যাওয়ায় বিছিন্ন ভাবে রোগের আক্রমণ দেখা দিলে কৃষি বিভাগের মাঠ তদারকি ও পরামর্শ অনুসারে কৃষকগণ সঠিক বালাইনাশক ব্যবহার করে রোগের আক্রমণ থেকে তাদের ফসলকে রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন।

      উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১৯ হাজার ১শত হেক্টর চাষযোগ্য আবাদী জমিতে ইরি-বোরো চাষ করেছেন কৃষকরা। অনুকূল পরিবেশ থাকায় ও কোন প্রকার রোগবালাই ছাড়া এবার ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ধান রোপণের পরে হঠাৎ ঠান্ডা আবহাওয়া, ঘন কুয়াশা জনিত কারণে ও দেশজুড়ে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে এই এলাকায় তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান। এই ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জিরাশাইল, বিরি ধান-২৮ ও ২৯, বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড, খাটো-১০ ও পারিজা জাতের ধান চাষ করেছেন। তবে এগুলোর মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগই জিরাশাইল জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এবার প্রতিবিঘা জমির ভাড়াসহ ধান উৎপাদনে কৃষকদের খরচ হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার টাকা আর প্রতিবিঘায় শুধু ধান উৎপাদনে খরচ পড়েছে প্রায় ৭শত ৫০টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ৫ শত ৫০ টাকা থেকে ৬ শত টাকা পর্যন্ত। ফলে পার মন ধানে দেড়শত থেকে দুইশত টাকা হারে লোকসান হচ্ছে। যদি ধানের মূল্য বৃদ্ধি করা না হয় তাহলে ধান বিক্রি করে কৃষকরা লাভের পরিবর্তে বড় লোকসানে পড়বে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে মাঠ পর্যবেক্ষণ করে কৃষকদের যথাযথ ভাবে পরিচর্যা, রাসায়নিক সার ও  কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

     উপজেলার মিরাট ইউপির হরিশপুর গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান জানান, ইরি-বোরোর এই মৌসুমে তার ২৫ বিঘা জমিতে জিরাশাইল ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি বিঘা প্রতি গড়ে ২২মণ করে ধান পেয়েছেন । এখন শুধু ভালো ভাবে পুরো ধান ঘরে নিয়ে আসার অপেক্ষায়।

আতাইকুলা গ্রামের কৃষক আইয়ুব হোসেন জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে তিনি এই মৌসুমে জিরাশাইলসহ বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ধান চাষ করেছেন। কোন রোগবালা ছাড়াই ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে কিন্তু শঙ্কা হচ্ছে ধানের মূল্য নিয়ে।

উপজেলার সিম্বা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি এবার প্রায় ১০বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করেছেন।  কিন্তু বর্তমান ধানের বাজার অনুসারে কৃষকরা ধানের নায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে উচ্চ হারে লোকসান গুনতে হবে। ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যে সব কৃষক জমি বর্গা নিয়ে এবার ইরি-বোরো ধান চাষ করেছেন। সরকারে কাছে আমাদের আকুল আবেদন যেন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনাসহ অচিরেই ধানের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস.এম. গোলাম সারওয়ার জানান, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে যদি আর কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে ধানের বাম্পার ফলন হবে।#

 

নিউজবাংলা/ একে        

 

 

 

Share This:

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*