‘ছাত্রদের অনুপস্থিতি দিয়ে জঙ্গি খোঁজা হাস্যকর’

নিউজবাংলা: ১১জুলাই, সোমবার:

ঢাকা : দেশে অব্যাহত সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ছাত্র ১০ দিন বা তার বেশি অনুপস্থিত আছে কি না এমন তালিকা চেয়েছে সরকার। এই তালিকা দিয়ে কি জঙ্গিবাদ থামানো যাবে এমন প্রশ্ন তুলেছে সচেতন নাগরিকরা। রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের মন্তব্যদিয়ে এমন খবর দিয়েছে পার্সটুডে।

 

দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ছাত্র ১০ দিন বা তার বেশি অনুপস্থিত আছে কি না- তার তালিকা পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে রোববার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

বাড়ি পালিয়ে জঙ্গিবাদে জড়ানোর বেশ কয়েকটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দশ দিনের বেশি অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, তুলনামূলক স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে-মেয়েরা যেসব প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে সেসব ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসব সন্ত্রাসের সাথে বেশি যুক্ত হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন, খুবই চিন্তিত।

এ প্রসঙ্গে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন বলেন, ছাত্রদের দশ দিনের অনুপস্থিতি দিয়ে জঙ্গি খোঁজার সূত্র বের করা হাস্যকর। কারণ, গুলশানের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তাদের নিখোঁজ হবার তথ্য পরিবারের থেকে পুলিশকে আগে জানাবার পরও তো কিছু লাভ হয় নি।

তিনি বলেন, সরকার যদি জঙ্গি দমনে আন্তরিক হয় তবে এসবের পেছনে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে হবে। অন্যের উপর দোষারোপ করে সেটা সম্ভব হবে না।

গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানে নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করেছিল আইএস, যারা গত কয়েক মাস নিখোঁজ ছিলেন বা পরিবারের যোগাযোগের বাইরে ছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

এরপর ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত যুবকও গত মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়।

এই ছয়জনের মধ্যে চারজনই বিভিন্ন ব্যয়বহুল ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। তাদের দুইজন ঢাকার নামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন, একজন ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের।

এ প্রসঙ্গে রাজধানীর অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাবেক প্রিন্সিপাল এবং বর্তমানে কার্ডিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ম্যনেজিং ডিরেক্টর জি এম নিজাম উদ্দীন বলেন আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেদের টার্গট করেছে কারণ বিভিন্ন দেশে যাতায়াতের জন্য তাদের পাসপোর্ট রয়েছে, তারা ইংরেজিতে কমিউনিকেশন করতে পারে এবং সোসাল মিডিয়া ব্যবহারে দক্ষ।

তিনি মনে করেন, সরকার যদি নজরদারী বাড়াতে পারে তবে জঙ্গিদের মদতদাতাদের শনাক্ত করা সম্ভব।

সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চবিত্ত পরিবারের বহু ছেলে এভাবে বাড়ি ছেড়ে জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে বলে এরইমধ্যে অভিভাবকদের সতর্ক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে অভিভাবকদের তথ্য দিতে অনুরোধ করেছেন।

নিউজবাংলা/ একে         

 

Share This:

Comments

comments

Previous: গুলশানে হামলাস্থল পরিদর্শন করেছেন নিশা
Next: আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*