নিউজবাংলা, ৮ অক্টোবর শনিবার:
নিউজবাংলা ডেক্স:
বাসস্থান সংকট, খাদ্যাভাব, কীটনাশক প্রয়োগ ও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে নিরীহ প্রাণী কাঠবিড়ালির সংখ্যা।
এক সময় দেশের প্রতিটি গ্রাম-গঞ্জের গাছের ডালা-পালায় নিরীহ নয়নাভিরাম এই প্রাণীটিকে হরহামেশাই দেখা যেতো। ১০-১২ ইঞ্চির এই প্রাণীটির গাছে গাছে ছিল অবাধ বিচরণ। লম্বাটে শরীরের স্তন্যপায়ী প্রাণী কাঠবিড়ালির সামনের ছোট দুই পায়ের দীর্ঘ লেজ ঘন পশমে ঢাকা। প্রখর দৃষ্টি শক্তিসম্পন্ন এই প্রাণীর পায়ের আঙ্গুলে ধারালো নখ দিয়ে লেজ গুটিয়ে মুহূর্তে যে কোন গাছের আগায় উঠে যায়। যেন পাখিদের মত দ্রুতবেগে উড়ে বেড়ায় এই কাঠবিড়ালিরা।
সামনের দুপা যেন দুহাতের মত। এই দিয়ে মুখের কাছে তুলে দারুণ ভঙ্গিতে ফল, খেজুরের রস, বীজ এদের প্রিয় খাবারগুলো খায়। খাওয়ার ভঙ্গি মানুষের দৃষ্টিকাড়ে।
তাই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘কাঠবেড়ালি! পেয়ারা তুমি খাও? গুড়-মুড়ি খাও? দুধ-ভাত খাও? বাতাবি-নেবু? লাউ? বেড়াল-বাচ্চা? কুকুর-ছানা? তাও- ডাইনি তুমি হোঁৎকা পেটুক, খাও একা পাও যেথায় যেটুক! বাতাবি-নেবু সকলগুলো একলা খেলে ডুবিয়ে নুলো! তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস পাটুস চাও? ছোঁচা তুমি! তোমার সঙ্গে আড়ি আমার! যাও!
কবি শিশুদের চাওয়া-পাওয়া, আকুতি-আবদার, চঞ্চলতা- দুরন্তপনা, হাস্য-কৌতুক সহজ সরল ভাষায় চিত্রিত করেছেন ছন্দে ছন্দে। এই কাঠবিড়ালি কমে যাওয়ায় শিশুরা এদের চিনছে ও জানছে বাইয়ের পাতায়। বাস্তবে অনেক শিশুই আর বাস্তবে দেখছে না। বিশেষ করে শহুরে শিশুরা।
তারপরও দেশের বিভিন্ন ঘন জঙ্গলাকীর্ণ গাছ-গাছালিতে টিকে থাকা এই প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে বসবাসের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে যাচ্ছে।
প্রাণী গবেষকরা জানান, বাংলাদেশে আট প্রজাতির কাঠবিড়ালি দেখা যায়। এদের মধ্যে পাঁচডোরা কাঠবিড়ালি ও তিনডোরা কাঠবিড়ালি মানুষের সংস্পর্শে তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, কাঠবিড়ালি পরিবেশের উপকারী প্রাণী। এ প্রাণীর উন্নয়নে সবারই কাজ করা প্রয়োজন। তাদের রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments