বাংলাদেশ সরকারকে জাকির নায়েকের চ্যালেঞ্জ

নিউজবাংলা: ১৫ জুলাই, শুক্রবার:

ঢাকা : পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এবার বাংলাদেশ সরকারের প্রতিই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েক। তার কোন বক্তব্য সন্ত্রাসে উসকানি দেয় বা অশান্তি সৃষ্টি করে তা দেখিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার সৌদি আরবের মদিনা থেকে স্কাইপেতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নায়েক।

তিনি বলেন, তিনি কখনই কোনো সন্ত্রাসী কাজে উৎসাহ দেননি। জিহাদের নামে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা ইসলামে দ্বিতীয় বড় পাপ। এটা ইসলামে নিষিদ্ধ, হারাম।

বাংলাদেশ সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, তার ভাষণের কোন অংশটা সেদেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেই অনুষ্ঠান পুরোটা দেখানো হোক।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জাকির নায়েক বলেন, তার কোনও ভাষণেই সন্ত্রাসের পক্ষে কথা বলেননি। অনেক ক্ষেত্রে ‘ডক্টরড টেপ’ অর্থাৎ কাটছাঁট করা ভিডিও দেখেই তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়ার অভিযোগ করছে সংবাদ মাধ্যম।

তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে এরকম ছোট ছোট কিছু ভিডিও ক্লিপ দেখেই এধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে। কয়েকটা ভিডিও ক্লিপে আবার আমার ভাষণের একটা দুটো বাক্য অপ্রাসঙ্গিক ভাবে তুলে নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।’

নায়েক জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, পিস টিভিতে দেওয়া আমার পুরো ভাষণগুলো কেউ দেখাক। তারপরে বলুক যে কোন অংশটা ভারত বা বাংলাদেশের জন্য অশান্তি তৈরি করতে পারে?’

মধ্যপ্রাচ্যের সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও তার বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশে পিস টিভি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে ভারত পুলিশ বলছে, তদন্তে এমন কোনো বিষয় পাওয়া যায়নি যাতে জাকির নায়েকের সন্ত্রাসে উসকানি দেয়ার অভিযোগ করা যায়। তিনি দেশে এলে গ্রেপ্তারের পক্ষেও কোনো যুক্তি নেই।

সম্প্রতি ভারতে আটক এক যুবকের বাবা অভিযোগ করেছেন তার ছেলে জাকির নায়েকের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেছিল। এছাড়াও আইএসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ভারতে আরও কয়েকজনের পরিবার অভিযোগ করেছে, তারা জাকির নায়েকের বক্তব্য দেখেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল।

সাংবাদিকরা এই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাকির নায়েক বলেন, তিনি প্রতি মাসে কয়েক হাজার মানুষের সঙ্গে দেখা করেন। তারা তার সঙ্গে ছবিও তোলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র হাতে গোনা কয়েকজনকেই হয়তো তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন।

তিনি বলেন, ‘জ্ঞাতসারে আমি কোন সন্ত্রাসবাদীর সঙ্গে দেখা করিনি। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের মধ্যে যদি এমন ব্যক্তি কেউ থেকে থাকেন যিনি সন্ত্রাসবাদী, তাহলে তো সেটা আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়!’

ভারতে পিস টিভি বন্ধ করে দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা কারণ আমি আন্দাজ করতে পারি – পিস টিভি একটা মুসলিম চ্যানেল, এটা ইসলামি চ্যানেল। সেজন্যই অনুমতি দেয়নি ভারত সরকার।’

পুলিশি তদন্তের মুখোমুখি হতেও তার আপত্তি নেই তিনি জানান। তবে ওই তদন্তের কথা তিনি শুধু সংবাদমাধ্যমেই জেনেছেন। সরকারি পর্যায়ে কেউ তার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত পাঁচ তরুণের মধ্যে এক তরুণ জাকির নায়েকের ভক্ত ছিল। এমন তথ্যের ভিত্তিতে জাকির নায়েক প্রতিষ্ঠিত পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় সরকার।

তবে বাংলাদেশের বন্ধের এক দিন আগে কাশ্মীরে পুলিশের গুলিতে নিহত বিচ্ছিন্নতাবাদী এক তরুণ নেতা নায়েকের অনুসারি ছিলেন এই অভিযোগে পিস টিভি বন্ধ করে ভারত।

 

 

 

নিউজবাংলা/ একে         

 

Share This:

Comments

comments

Previous: মসজিদের ইমামকে গলাকেটে হত্যা

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*