নিউজবাংলা: ১৩ জুলাই, সোমবার :
ঢাকা: দীর্ঘ দিন ধরেই জল্পনা-কল্পনা ছিল মন্ত্রিসভা রদবদলের। বেশ কয়েকজনকে নিয়ে জোর গুঞ্জনও ছিল।

কিন্তু হঠাৎ সবাইকে অবাক করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভায় হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী এমন একটি পরিবর্তন আনলেন যা আলোচনায়ই ছিলো না।
দলের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের দুর্দিনের কাণ্ডারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই মন্ত্রণালয় নিয়ে এর আগে কমবেশি অভিযোগ যে ছিল না তা নয়। তবে তাকে মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হবে-এমনটি কারো ভাবনাতেই ছিল না।
আশরাফুলকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গায় বসানো হয়েছে মন্ত্রিসভার আরেক প্রভাবশালী সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। তিনি নিজের মন্ত্রণালয়ের বাইরে নতুন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
শাসক দল ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, মন্ত্রিসভায় আরেকটি রদবদল আসন্ন। আগামী দু/এক দিনের মধ্যেই এই রদবদল হচ্ছে বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে।
তবে এ নিয়ে দলের দায়িত্বশীল কেউ মুখ খলতে চাইছেন না। তবে আশরাফকে সরিয়ে দেয়ার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সিলেট সফরকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রিসভায় আরো কিছু রদবলের ইঙ্গিত দেন।
সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কথা বলে জানা যায়, ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় আরেক দফা রদবদলের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে।
তবে কারা মন্ত্রিসভা থেকে বাদ যাচ্ছেন এবং কারাই বা মন্ত্রিসভায় ঢুকছেন সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই জানেন এটি। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল হলে অনেক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন হতে পারে বলে জানা গেছে।
শাসক দলের এক নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর টিমে কাকে রাখবেন আর কাকে বাদ দিবেন তা তিনিই ভালো জানেন। এ নিয়ে আমাদের কৌতূহল থাকতে পারে কিন্তু ঐ পর্যন্তই।
তবে বেশ কিছু দিন ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীকে নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। মন্ত্রিসভায় যদি রদবদল হয় তাহলে এরা বাদ যেতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
মন্ত্রিসভার একজন সদস্য জানান, মন্ত্রিসভায় নতুন মুখের আলোচনা কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। তবে মন্ত্রিসভায় রদবদলের কাজটি পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।
বেশ কিছু দিন ধরেই কয়েকটি মন্ত্রণালয় খালি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় অন্যতম।
শোনা যাচ্ছে মন্ত্রিসভা রদবদল হলে এবার দলের ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সর্বশেষ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা মন্ত্রিসভায় ঠাই পেতে পারেন।
শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় জায়গা হতে পারে এমন কয়েকজনের মধ্যে যাদের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, তারানা হালিম অন্যতম।
মন্ত্রিসভায় সাবেক সদস্যদের মধ্যে যারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।
টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়।
একই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী আরেক দফা মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেন। সে সময় এ এইচ মাহমুদ আলীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নজরুল ইসলামকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ওই সময় আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নিউজবাংলা/একে