নিউজবাংলা: ২১জুলাই , মঙ্গলবার:
যশোর: ফুল চাষে খ্যাত যশোরের গদখালীতে গত ক’দিনের টানা বর্ষণে কয়েক লাখ টাকার ফুল নষ্ট হয়েছে।

 

এছাড়া ফুল ক্ষেতেও পচন ধরতে শুরু করেছে। ফলে এ অঞ্চলের সাড়ে চার হাজার ফুল চাষিরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটছে তাদের।

সারাদেশে যে ফুল বেচাকেনা হয় তার ৭৫ ভাগই যশোরের এই গতখালিতে উৎপাদিত হয়। তবে এবার অতি বৃষ্টির কারণে ঝরে গেছে ফুলের পাঁপড়ি। তাই গদখালী ফুলের আড়তগুলো এখন ক্রেতাশূন্য।

স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানান, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী এলাকার ব্যপক অঞ্চলজুড়ে ফুল চাষ হয়। বছরে অর্ধশত কোটি টাকার ফুল উৎপাদন হয় এই গদখালী থেকে। ফুল চাষ লাভজনক পেশায় পরিণত হওয়ায় গত কয়েক দশক ধরেই এই এলাকার কৃষকরা এ পেশার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

গদখালী ফুলচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের আশানুরূপ উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু অতি বর্ষণের কারণে ঝরে গেছে ফুলের পাঁপড়ি, নষ্ট হয়ে পড়ছে ফুল। ইতিমধ্যে অনেক ফুল গাছে পচন ধরতে শুরু করেছে।

আগে প্রতিদিন ত্রিশ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হলেও এখন দিনে এক লাখ টাকারও ফুল বিক্রি হয় না।

স্থানীয় পুটাপাড়া গ্রামের চাষি আবুল কাশেম বলেন, এ বছর চার বিঘা জমি লিজ নিয়েছে। প্রতি বিঘার জন্য ১২ হাজার টাকা করে গুণতে হয়েছে। তার প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে। একদিন পরপর ওই ফুল তুলে বাজারে বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ফুলের পাঁপড়ি ঝরে যাওয়ায় ওই ফুল বিক্রি হচ্ছে না।

আবুল কাশেম বলেন, পরের জমি লিজ নিয়ে ফুলের আবাদ করেছি। ঈদের সময় ফুল বিক্রির যে টার্গেট নিয়েছিলাম তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের পথে বসতে হবে।

গদখালী বাজারের ফুল ব্যবসায়ী আতর আলি বলেন, বাজারে ফুলের চাহিদা থাকলেও ফুলের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো ফুল চাষিরা সরবরাহ করতে পাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কম দামে ফুল কেনার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিরক কুমার সরকার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের উৎপাদনও হয়েছে বেশি। এবারের বাজারে চাষিরা এক বিঘা জমি থেকে গড়ে ৬০/৭০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছিলেন। কিন্তু অতি বৃষ্টিতে ফুলের গুণগত মান নষ্ট হওয়ায় চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

নিউজবাংলা/একে