Breaking News

ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার

নিউজবাংলা: ২৭ জুন, সোমবার:

ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে জনসাধারণের চিকিৎসা ব্যয়, যার অধিকাংশই যাচ্ছে ওষুধপত্রে। এ কারণে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। জনগণের ব্যয় বৃদ্ধি রোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওষুধের পাশাপাশি মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণের কথাও ভাবা হচ্ছে।

 

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে সম্প্রতি এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. জুলফিকার আলী বর্তমান সময়ের বাস্তবতা ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ওষুধের মূল্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি মেডিকেল ডিভাইসেরও মান ও মূল্য নির্ধারণ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মত দেন তিনি।

জানতে চাইলে ডা. জুলফিকার আলী বলেন, সরকার নির্ধারিত অন্যান্য ওষুধ কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করে। আমদানি করা ওষুধও ইচ্ছামতো দামে বিক্রি হয়। একই কথা প্রযোজ্য মেডিকেল ডিভাইসের ক্ষেত্রেও। এতে জনগণের স্বাস্থ্য ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। এ বিবেচনা থেকেই ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে।

১৯৯৪ সালের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে উৎপাদিত প্রাইমারি হেলথকেয়ারের ১১৭টি ওষুধের মূল্য সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর জন্য এসব ওষুধের কমপক্ষে ৬০ শতাংশ উৎপাদনের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ কোম্পানিই ১১৭টি ওষুধের মধ্যে মাত্র দু-একটি উত্পাদন করে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, সরকার প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে। উৎপাদনকারী কোম্পানি অন্য ওষুধগুলোর দাম নির্ধারণ করে ভ্যাট পরিশোধের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে সার্টিফিকেট গ্রহণ করে। আমদানি করা সব ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য সরকারি মূল্য নির্ধারণ কমিটির মার্ক-আপ অনুসরণের মাধ্যমে নির্ধারণ হয়।

মেডিকেল ডিভাইসের বিষয়ে তিনি বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনকৃত মেডিকেল ডিভাইস আমদানি করা হলে তার মূল্য অধিদপ্তর নির্ধারণ করে দেয়।

দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো বর্তমানে নিজেদের ইচ্ছামতো ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। দুই মাসের মধ্যে দুই শতাধিক ওষুধের দাম বেড়েছে বলে জানা গেছে। ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন দেশের দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষ। এদের আয়ের একটা বড় অংশ ব্যয় হয় ওষুধ কেনায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্য অর্থ ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ জনগণ নিজেরাই নির্বাহ করে। দেশে বর্তমানে ক্যান্সার, মস্তিষ্কের জটিল রোগ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যাসহ বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধির প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এজন্য স্বাস্থ্য ব্যয়ও বাড়ছে। এসব ব্যয় মেটাতে গিয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছেন অনেকেই।

স্বাস্থ্য ব্যয় ও সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। এ খাতে ব্যয় ও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকেও স্থান দেয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা রকফেলার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পিআইবি বেশ কয়েকটি সভা-সেমিনারও করেছে।

অন্যদিকে সরকারিভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে দিলে দাম আরো বাড়বে বলে মনে করছে ওষুধ শিল্প সমিতি। সমিতির মহাসচিব সফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় ওষুধের মূল্য অনেক কম। এর পরও সরকার মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নিলে কাগজপত্র দেখে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হবে। -বনিকবার্তা।

নিউজবাংলা/একে

Share This:

Comments

comments

Previous: আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে চিলি
Next: সমকামী বৃটিশ মন্ত্রী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*