নিউজবাংলা,৩ অক্টোবর সোমবার:
গ্যালারি থেকে লাফিয়ে পড়ে সোজা শ্রীঘরে। ২৪ ঘণ্টা পর চৌদ্দশিক থেকে মুক্তি পেয়ে মাশরাফির সেই ‘অতি পাগল’ ভক্ত বলছেন, ‘আমার ভুল হয়ে গেছে। কেউ যেন আমার মতো এই ভুল আর না করেন।’
ঘটনাটি ১ অক্টোবরের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের ফাইনালে অতিথরা তখন পরাজয়ের ক্ষণ গুনছে। ম্যাচের বয়স ২৯তম ওভারে। হঠাৎ মেহেদী হাসান নামের ওই যুবক দৌড়ে মাঠে ঢোকেন। তার পেছন পেছন পুলিশও ছুটে আসে।
মাশরাফি কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে যান। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে ভক্তের দিকে হেঁটে যান। বুকে জড়িয়ে ধরেন। পুলিশকে বারবার অনুরোধ করেন, যেন ওর গায়ে হাত তোলা না হয়।
ওই দিন রাতে মেহেদিসহ তার বন্ধুদের মিরপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক দফা জিজ্ঞাসার পর তবেই তাদের ছেড়েছে পুলিশ।
এরপর রাত ১১টার দিকে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
‘আলহামদুলিল্লাহ। সুস্থ এবং নিরাপদে বাসায় ফিরে আসতে পারছি। আমাকে বাসায় ফিরে আসতে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাশরাফি ভাই, আরাফাত সানি ভাই, বিসিবি, মিরপুর মডেল থানা, সাভার মডেল থানা, ডিএসইউ গ্রুপসহ আরও অনেক গ্রুপ, আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ফেসবুক ফ্রেন্ডস, আরও যারা ফেসবুক ইউজার আছেন, যারা বিভিন্নভাবে আমাকে সাহায্য করেছেন, তাদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা আমি’-লিখেন মেহেদী।
এরপর রাত ১২টার দিকে দ্বিতীয় স্যাটাসে আটক হওয়া তিন বন্ধু-মারুফ, রাফি ও আবিরের কাছে দুঃখপ্রকাশ মেহেদী লেখেন, ‘সরি ব্রাদার্স… আমার জন্য তোরা আমার সাথে সাথেও থানায় আটক ছিলি। তোদের না বলেই আমি মাঠে চলে গিয়াছিলাম। আমার জন্য অনেক কষ্ট করলি তোরা। আমাকে মাফ করে দে প্লিজ।’
রাত একটার দিকে আরেকটি স্ট্যাটাসে মাশরাফি ভক্ত লিখেন, ‘আমি জানি আমার গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে গিয়ে আমার বস মাশরাফি ভাইকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরায় মাঠের আইন ভঙ্গ হয়েছে। আর এই ঘটনাটি আমার অতিরিক্ত আবেগবশত ঘটেছে। আমার এই কাজটা করার পর যে বিসিবি আর পুলিশ ভাইদের এমন চরম ভোগান্তি হবে, তা আমার জানা ছিলো না। আমি বিসিবি আর পুলিশ ভাইদের আছে অনেক দুঃখিত। আমার জন্য আপনাদের অনেক কষ্ট হয়েছে।’
কিভাবে মাঠে চলে যান মেহেদী সে বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি। তিনি লিখেন, ‘আমার গ্যালারির সামনের পুলিশ ভাইরা সারাক্ষণ খুবই সতর্ক ছিলেন, আমি সারাক্ষণই তাদের ফলো করতেছিলাম। আর একজন পুলিশ ভাই যখন অন্য দিকে তাকায়, ঠিক তখনই আমি গ্যালারি থেকে লাফ দিয়ে এক দৌড়ে মাঠে চলে যাই।’
এই ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করে মেহেদী লিখেন, ‘আমার এই অবেগবশত ভুলের জন্য বরখাস্ত হওয়া পুলিশ ভাইদের আবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছি। মিরপুর মডেল থানার সকল পুলিশ ভাইরা খুবই হেল্পফুল ছিলেন। তারা আমাকে আর আমার সাথে আটক হওয়া আমার তিন বন্ধুদের কোনওভাবেই আঘাত করেননি। আমি তাদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ।’
গণমাধ্যমের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেহেদী। লিখেন, ‘মিডিয়ার ভাইরা আমাকে আর আমার তিন বন্ধুকে থানা থেকে বের হতে খুবই সাহায্য করেছেন। মিডিয়া ভাইদের অনেক ধন্যবাদ। আমার মতো এমন ভুল আর কেউ করবেন না প্লিজ। একটু আবেগী হওয়ার কারণেই আমার দ্বারা এই ভুলটি হয়েছে।’
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments