নিউজবাংলা: ১০ আগস্ট, সোমবার:

ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চোখের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে ছয় সপ্তাহের সময় দিয়েছেন আদালত।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার সোমবার এই অনুমতি প্রার্থনা করলে আদালত অনুমতি প্রদান করেন। সোমবার রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

এদিন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থতার জন্য আদালতে উপস্থিত না হতে পারায় সময় প্রার্থনা করেন আইনজীবীরা। পাশাপাশি তার চোখের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করেন।

অন্যদিকে তার পক্ষে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ মূলতবির জন্য আবেদন করেন আইনজীবীরা।

শুনানি শেষে বিচারক আদালতে অনুপস্থিতির সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছয় সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে। এরপর আদালত আসামি জিয়াউল হক মুন্না এবং মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বাদীকে জেরার করতে বলেন।

আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে অ্যাডভোকেট আমিনুল হক বাদীকে জেরা করেন। মুন্নার পক্ষে জেরা শেষ হওয়ার পর আসামি মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে জেরা শুরু করেন আইনজীবী টিএম আকবর। মনিরুল ইসলামের পক্ষে জেরা অব্যাহত থাকা অবস্থায় আগামী ২৭ আগস্ট পরবর্তী জেরার দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে মামলাটিতে গত ৩ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বাদীর জেরা শেষ হয়।

খালেদা জিয়া পক্ষে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জয়নুল আবেদীন মেজবাহসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুদকের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ওই আদালতের বিচারক বাসুদেব রায় দুই মামলায় খালেদা ও তারেক রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর থেকেই এ বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসছিল খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ওই অনাস্থার মধ্যেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন তিনি। এরপরই গত ১৮ ডিসেম্বর তাকে বদলি করে আবু আহমেদ জমাদারকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এতিমদের জন্য বিদেশি থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

আসামি তারেক রহমান সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে আছেন। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু হতেই পলাতক।

অন্যদিকে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এ মামলায় তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।

মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।

নিউজবাংলা/একে