নিউজবাংলা: ১৩ আগস্ট,বৃহস্পতিবার:

এম এ আই সজিব:

খুব ছোটবেলা থেকেই শুনছি সব পুরুষ এক! পুরুষ ভণ্ড, নষ্ট, লম্পট, মিথ্যাবাদী, প্রতারক- এমন অনেক কিছুই। আমরা সব কিছুকেই খুব সরলীকরণ করি, গড়পড়তা দেখি, ঢালাও মন্তব্যের অভ্যাস আমাদের। অনেক দিন ধরে লক্ষ করছি, পুরুষকে একটি দুষ্টু চরিত্রের ইউনিফর্ম পরিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে আমাদের। নারীদের আমরা আড়ালে রাখতে চাই।

আড়ালে রাখতে-রাখতে তাদের অনেক কিছুই আড়াল হয়ে যায়। অথচ তারাও কি কম যায় হিংসায়, হৃদয়হীনতায়, শঠতায়, বেহায়াপনায়? তারা কি ধোয়া তুলশী পাতা? কখনও-কখনও তো আমার মনেই হয় নারী, পুরুষের চেয়েও অনেক বেশি ভণ্ড, নষ্ট, মিথ্যাবাদী। হীনতায়, তৃণতায় সমানে-সমান, কখনও-কখনও আরও অনেক বেশি বরং ।

কখনও-কখনও নারী পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি পুরুষতান্ত্রিক আচরণ করে। বাধ্য করে পুরুষকে পুরুষতান্ত্রিক হতে। সে চায় অসভ্যতা ভেতরে-ভেতরে লালন করে পুরুষ তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অনেকটা এমন যে, চায় বাঘ-সিংহ অথচ বেড়াল পুষতে ভালোবাসে।

‘পুরুষ প্রতারক’ বা ‘প্রতারক পুরুষ’ এমন একটি টার্মই চালু হয়ে গেছে। প্রতারণা কি কেবল পুরুষই করে, নারী করে না? কত শত পুরুষ দেখেছি, নারীর প্রতারণায় ক্ষত-বিক্ষত। সব শহরে এখন এমন নারী খুব কম নয়, যে একই সঙ্গে সাত জনকেই বলে ‘ভালোবাসি’ অথচ সাতজনের কাউকেই ভালোবাসে না সে। একটি মেয়ে সাতজনকে কেন, সাতশ জনকেও ভালোবাসতে পারে। তাতে বিন্দুমাত্র আপত্তি আমার নেই। কিন্তু বলব, ভালোবাসি, অথচ ‘ভালোবাসা’ নেই। মিথ্যে কথা আছে, প্রতারণা আছে, আপত্তি আমার সেখানেই। সাইকো অ্যানালিস্টরা বলছেন, এমন সম্পর্কে ‘লাভ’ নেই, আছে ‘গেইম’। এবং এই গেইমটা ‘প্যাথলজি’। খুব বলতে শুনি, পুরুষগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। দেখছ না, ঘরে-ঘরে পরকীয়া। প্রতিটা বিবাহিত পুরুষের এখন দুটো অ্যাকাউন্ট। একটা ঘরে, বাইরে অন্যটা। এই পরকীয়াগুলো পুরুষ কার সঙ্গে করছে? নারীর সঙ্গেই তো না পুরুষের সঙ্গে। পরকীয়ার এই নারীরা তবে আসছে কোথা থেকে? এমন মেয়ে আমার অনেক দেখা, ডাবল সিম। ত্রিপল ফেসবুক আইডি। একাধিক উপপতি। ডাবল, ট্রিপল প্লেজার। একটা ঘরে, অন্যগুলো বাইরে। লাভ কী কেবল পুরুষের দোষ দিয়ে? বহুগামী কেবল পুরুষ নয়, বহুগামী নারীও হয়।

মেয়েরা কেন সাজে? শুধু নিজের জন্য নয়। অন্যের জন্য। পুরুষের জন্য। কোনও মেয়ে যদি পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ না করতে পারে, তার অন্ত নেই বেদনার। সেই মেয়ে রীতিমতো বিষন্নতা ভোগে। মেকআপ ঘষতে ঘষতে মেয়েরা নিজের মধ্যে থাকে না, অন্য আরেক মানুষ হয়ে যায়। তাতে ভারি আনন্দ তাদের। মেয়েদের হাইহিল, পেনসিল হিল দেখে খুব ভয় হয় মাঝে-মাঝে। বিজ্ঞান বলছে, হাইহিল কখনও-কখনও পায়ের গঠন স্থায়ীভাবে বদলে দেয়। তার আরও তিন ইঞ্চি, চার ইঞ্চি, পাঁচ ইঞ্চি লাগে। । সে আসলে কিসের সমান, কার সমান হতে চায়? আবার ৫০ ঊর্ধ্ব নারীদেরও ফেসবুকে ৩৫ বছরের ছবি কেন? সামান্য বলিরেখায়, ত্বকে ভাঁজ পড়ায়, ঝুলে পড়ার তাদের অন্ত নেই দুশ্চিন্তার। তাহলে মেয়েরা সবচেয়ে বড় প্রতারক, ভন্ড, নষ্ট। পুরুষকে নিজের সম্পত্তি ও ব্যক্তিগত ভাবা সবচেয়ে ভয়াবহ দিক মেয়েদের। সে পুরুষ প্রেমিক হোক, হোক স্বামী। প্রতিটি মেয়েই মনে করে পুরুষ তার ‘প্রাইভেট প্রোপার্টি’।

খুব সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায় একটি মেয়ে, চুল দিয়ে মোছ বানিয়ে আয়নায় দেখছে। এটাই আসলে মেয়েদের ভেতর। ভণ্ডামি, শঠতা, প্রতারণা, অসততা আসলে নারী। অভিযোগের আঙুল কেবল পুরুষ কেন, নারীর দিকে তোলারও অনেক সুযোগ থাকে ও আছে।

‘ক্রিটিক্যাল থিংকার’ সমাজে প্রায় নেই বললেই চলে। অবশ্য ক্রিটিক্যাল থিংকিংয়ে বিপদও আছে। লোকে অনেক সময় বুঝতে পারে না, তাদের চিন্তা, যুক্তি, বিশ্লেষণ। তাই বলে কি ক্রিটিক্যাল থিংকিং, অ্যানালিসিস থেমে থাকবে? থেমে থাকলে জগত এগোবে কিভাবে?

নিউজবাংলা/একে