নিউজবাংলা: ১৩ আগস্ট,বৃহস্পতিবার:
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে আছে, থাকবে। এ বিষয়ে কারও কথায় কর্ণপাত করার প্রয়োজন নেই।

 

বুধবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে তিনি এ পরার্শ দেন।

দীর্ঘ নয় মাস পর বৈঠক অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটান খালেদা জিয়া।

গত জুন মাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছিলেন, বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে হবে, নয়তো দলটি বিলীন হয়ে যাবে।

বুধবারের বৈঠকে একজন নেতা বিষয়টি খালেদা জিয়ার দৃষ্টিতে আনলে তিনি বলেন, ‘জামায়াত আমাদের সঙ্গে ছিল, আছে, থাকবে। বাইরের কারও কথায় কর্ণপাত করার দরকার নেই। বি চৌধুরী জোটের কেউ নন। বিএনপিরও প্রতিনিধিত্ব করেন না। তিনি যা বলেছেন, তার দায়দায়িত্ব তার। তার বক্তব্যে বিভ্রান্ত হবেন না।’

বৈঠক সূত্র জানায়, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান জামায়াতের উদ্দেশে বলেন, ‘মিডিয়ায় বলে জামায়াত আমাদের সাথে নেই। দূরত্ব বজায় রেখে চলে। এ নিয়ে তারা প্রতিবাদ করেন না কেন?’

এর জবাবে জামায়াতের প্রতিনিধি দলের নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুল হালিম বলেন, ‘আমরা বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে বারবার বলেছি- জোটের সঙ্গে আছি, থাকব।’

খালেদা জিয়া আবদুল হালিমকে বলেন , ‘আপনারা একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। এগুলোও তুলে ধরবেন।’

এসময় বিগত দিনে জোটের নেতাকর্মীরা ধরপাকড় ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি খালেদা জিয়ার কাছে তুলে ধরা হয়।

তিনি বলেন, বিএনপি জোট ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হবে। কারও বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

এদিকে বৈঠকে ২০ দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের নিজ নিজ দল গোছানোর আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি দল গোছাচ্ছে। সবাইকে দ্রুততম সময়ে দল গুছিয়ে শক্তিশালী করতে হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল হালিম, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী।

এছাড়া আরো ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) প্রধান শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ভাসানী) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এইচএম কামরুজ্জামান খান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।

পাশাপাশি ছিলেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার সায়েদুল হাসান, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানী।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মুফতি ওয়াক্কাস, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) মহাসচিব সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সভাপতি গরীবে নেওয়াজ, সাম্যবাদী দলের চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ নভেম্বর জোটের সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের প্রায় একমাস পরে ৫ জানুয়ারি থেকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। কিন্তু সেই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।

নিউজবাংলা/একে