নিউজবাংলা: ১৯ জুলাই, রবিবার :
সিলেট: হবিগঞ্জের বিএনপিপন্থি মেয়র জিকে গউসকে কারা অভ্যন্তরে ছুরিকাঘাতের কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘ঈদের মতো একটি দিনে কারাগারেও মানুষ আজ নিরাপদ নয়।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মী, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, এ সরকারের আমলে কারাগারেও মানুষ নিরাপদ নয়।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা দেশকে রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবে তাদের হাতেই দেশ আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা অবৈধভাবে জনগণকে আটক করছে। টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছে, না হলে গুম করে ফেলছে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে খালেদা বলেন, ‘রাজনৈতিক দিক থেকে আমাদের বিভেদ থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের মধ্যে সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক হতে পারে, হানাহানি নয়।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হলে মেধারভিত্তিতে প্রশাসনে পদোন্নতি দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। সেজন্য বিএনপিকে ভেঙে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। কিছু গণমাধ্যমের এজেন্ট দিয়ে লেখানো হচ্ছে যে, বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে, অমুক জেলার অমুক সংগঠন ভেঙে গেছে।’ এগুলো সব সরকারের কারসাজি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
খালেদা আরো বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা অত্যাচারিদের সর্বোচ্চ অত্যাচার দেখেন, তারপর শাস্তি দেন। এই সরকারের অত্যাচার এতই বেড়ে গেছে যে তাদের পতন হবেই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি পূণর্গঠনের কাজ শুরু করেছে। এরপর আমরা আন্দোলনে যাব। কিন্তু বিএনপি জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা বিগত দিনের আন্দোলনের মতোই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
মন্ত্রীরা দুর্নীতি করে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা প্রতিনিয়ত দুর্নীতি করছে অথচ তাদের বিচার হয় না। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে।’
ব্রাজিল থেকে পঁচা গম আমদানির কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই পঁচা গম পুলিশকে দেয়া হচ্ছিল, কিন্তু পারেনি। এখন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে, কিছু ভালো গমের সঙ্গে মিশিয়ে তা যোগ্য করে মানুষকে খাওয়ানো হবে। কিন্তু এতে দেশের কোনো উন্নয়ন হবে না, মানুষের রোগ বৃদ্ধি পাবে।’
খালেদা জিয়া বেলা ১১টা ৪২ মিনিট থেকে সোয়া ১২টা পর্যান্ত ২০ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে, সোয়া ১২টা থেকে সাড়ে বারটা পর্যন্ত ৩৯টি দেশের কূটনীতিক ও এম্বাসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং সাড়ে ১২টা পর থেকে সাধারণ মানুষ ও বিএনপি বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময় করেন।
এসময় সেখানে উপস্থিত আছেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এমকে আনোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদ্ষ্টো এনাম আহমেদ চৌধুরী, দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, দলের ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা শিরিন সুলতানা প্রমুখ।

নিউজবাংলা/একে