নিউজবাংলা: ১৯ জুলাই, রবিবার :
ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হাতিমারা এলাকার হামিদুল ইসলামের মেয়ে পারভীন আক্তারের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা বাদশা মিয়ার ছেলে তারেক রহমানের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত মেনে নেয়নি পারভীনের বাবা।

অবশেষে পারভীন আক্তার (১৩) নিজেও না ফেরার দেশে চলে গেল। নিজ বাবার পিটুনিতে প্রেমিকের মৃত্যুর ৬ দিন পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে পারভীন। গত ৮ জুলাই প্রেমিক তারেক রহমানকে (১৪) বাড়িতে ডেকে এনে পিটুনি দিয়ে হত্যা করেছিল পারভীনের বাবা হামিদুল ইসলাম।
পুলিশ মঙ্গলবার সকালে লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ, এলাকাবাসী, পারভীন আক্তারের পরিবার সূত্রে জানা যায়, স্কুলপড়ুয়া এক কিশোর-কিশোরীর প্রেমের সম্পর্কটি বিয়েতেও গড়ায়। তারা জুন মাসে বিয়ে করে। হাতিমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে তারেক দশম ও পারভীন নবম শ্রেণীতে পড়ত।
পারভীন আক্তারের বাবা হামিদুল ইসলাম ৮ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারেক রহমানকে বাড়িতে ডেকে আনে। এ সময় ওই ছাত্রী ও তার মা শিরিন আক্তারকে পাশের একটি রুমে তালাবদ্ধ করে আটকে রেখে হামিদুল ইসলাম।
এরপর সহযোগীদের নিয়ে তারেক রহমানকে বেধড়ক মারধর করে সে। এক পর্যায়ে তারেক জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আহত অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। খবর পেয়ে তারেকের স্বজনরা বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রেমিক তারেক রহমানকে পিটিয়ে হত্যার দৃশ্য পারভীন আক্তার সহ্য করতে পারেনি।
সে রোববার সন্ধ্যায় তারেক রহমানের কবরের পাশে গিয়ে কাঁদতে থাকে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সেখান থেকে পারভীন আক্তারের মা শিরিন আক্তার অনেক বুঝিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
এরপর তার মা শিরিন আক্তার অনেক ডাকাডাকি করলেও পারভীন দরজা খোলেনি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পারভীন আক্তার দরজা না খোলায় তার ছোট বোন তামান্না আক্তার ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে উঁকি মেরে পারভীন আক্তারকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখে।

জয়দেবপুর থানাধীন চক্রবর্তী পুলিশ ক্যাম্প ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে লাশ উদ্ধার করে।
চক্রবর্তী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জাকির হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে এটি হত্যা, না আত্মহত্যা।

নিউজবাংলা/একে