নিউজবাংলা: ৩০জুলাই : বৃহস্পতিবার:

ঢাকা: অবশেষে ফাঁসি হল ইয়াকুব মেমনের। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে নাগপুর জেলে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ফাঁসির পর ২ মিনিটের নীরবতাও পালন করা হয়। বিমানে তার দেহ নেয়া হয় মু্ম্বাইয়ের বাড়িতে।

এ দিন ইয়াকুবের ফাঁসি ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, এজন্য মুম্বাইয়ে তার বাড়ি ঘিরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কড়া সতর্কতা রয়েছে দেশজুড়ে।

সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর বুধবার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও ইয়াকুব মেমনের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেন। একই রায়ের পুনরাবৃত্তি হয় গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টের রায়েও। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য পূর্বনির্ধারিত সময়সীমাই বহাল থাকে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার মধ্যেই ফাঁসির নির্দেশ দেন বিচারপতি। স্থান, নাগপুর জেল। নিজের ৫৪তম জন্মদিনেই ফাঁসির দড়ি রইল ইয়াকুব মেমনের ভাগ্যে।

তবে ভোর রাত পর্যন্ত নাগপুর সেন্ট্রাল জেল জানতো না যে আদৌ ফাঁসি কার্যকর করা হবে কিনা। কিন্তু এরপরেও শেষ মুহূর্তের সব প্রস্তুতি আগে থেকেই সম্পূর্ণ করে রেখেছিল জেল কর্তৃপক্ষ। তৈরি ছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ-প্রশাসনও। সারা রাজ্য জুড়ে জারি ছিল কড়া সতর্কতা। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সব পুলিশকর্মীর ছুটি।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সূর্যোদয়ের ঠিক পরেই অর্থাৎ ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যেই মেমনের ফাঁসি হয়েছে।

জেল সূত্রের খবর, আসামিকে ফাঁসির জন্য তৈরির কাজ শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের দুঘণ্টা আগেই। প্রথমে গোসল, তার পর যদি সে কিছু খেতে চায় তার ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে আসামির ইচ্ছা জেনে নেওয়া হয় আগের দিন রাতেই।

সূত্র জানায়, নিজের শেষ দিনটিতে স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে ইয়াকুব মেমন। সে ক্ষেত্রে তাকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরিজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আসামিকে একঘণ্টা নিজের মতো থাকতে দেওয়া হয়।

ইয়াকুবের ক্ষেত্রে ফাঁসির গোটা পর্ব তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া হয় বাবু জল্লাদকে। আজমল কসাবের সময়েও দায়িত্বে ছিলেন এই বাবু। তাঁর তত্ত্বাবধানে চার জন ফাঁসুড়ের একটি দল গঠন করা হয়। পাকা কলা ও ঘি মাখিয়ে তৈরি করা হয় নরম সুতির দড়ি।

গতকাল সকাল ও সন্ধ্যায়, ইয়াকুবের সমান ওজনের বালির বস্তা দিয়ে ফাঁসির রিহার্সালও হয়েছে।

জেল সূত্রে জানা যায়, ফাঁসি-পর্ব মিটতে সময় লেগেছে তিন থেকে পাঁচ মিনিট।

ইয়াকুবের ভাই সুলেমন ও উসমান আগে থেকেই নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে পৌঁছে যায়। সঙ্গে ছিলেন ইয়াকুবের স্ত্রী ও মেয়েও।

ইয়াকুবের মরদেহ দাফন এবং জানাজার জন্যে এক মৌলবির ব্যবস্থাও রাখে নাগপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ।

 

 

নিউজবাংলা/একে