Breaking News
  • বাসাইলে বিএনপি’র ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
  • বরিশালে অপহৃত দুই কলেজছাত্রী উদ্ধার
  • সংসদে খুনিরা ঢুকে পড়লে সংসদের নিরাপত্তা কোথায়, প্রশ্ন রিজভীর
  • কাল দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন শিল্পমন্ত্রী
  • সরকারের অভ্যন্তরে আতঙ্ক এখন চরমে: নোমান

জনগণের ক্ষোভ আড়াল করতেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা : মির্জা আলমগীর

নিউজবাংলা: ১৯ জুন, রোববার:

ঢাকা : সাম্প্রতিক গণগ্রেপ্তার ও ক্রসফায়ার নিয়ে দেশের জনগণের ক্ষোভকে আড়াল করতেই লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কুৎসা রটাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে অরুচিকর, কুৎসাপূর্ণ,  উস্কানীমূলক ও ভয়ংকর প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশই শুধু নয়, তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর বিষাক্তভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে স্বৈরতান্ত্রিক আক্রমণের এক নতুন দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, শনিবার এক ইফতার পার্টিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তারেক রহমান নাকি লন্ডনে বসে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’র ভাগনি বৃটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীকে নাকি হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন শেখ রেহানাকেও নাকি হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হত্যার জন্য হুমকি-ধার্মিক এটা বাংলাদেশের শাসকদলের বৈশিষ্ট্য। উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে এটি কোনক্রমেই সম্ভব নয়। এটি বর্তমানে কেবলমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব। লন্ডনে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি যদি অন্য কাউকে হত্যার হুমকি দেয়, সেই ব্যক্তি কী আইনের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে? বৃটেনের সরকারি দল কি বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রের প্রভু হয়ে বসে? বৃটেনে কি সরকারি শাসনযন্ত্রকে বাংলাদেশের মতো অপব্যবহার করা যায়? সেখানে শাসনযন্ত্রকে কি দুর্নীতির চক্রে ও উৎপীড়নের হাতিয়ারে পরিণত করা যায় ? বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করার দৃষ্টান্ত কি বৃটেনে কয়েক শ’ বছরের ইতিহাসে আছে? সেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কি পাইকারিহারে মিথ্যা মামলা দেয়া যায়? জনগণের সঙ্গে চূড়ান্ত অবিচার ও বিশ্বাস ভঙ্গ করা যায় ? আইনের শাসনের সেই দেশে বাস করে কিভাবে একজন ব্যক্তি সেখানকার একজন এমপি ও তার মা খালাকে হত্যার হুমকি প্রদান করবে? কারণ সেদেশে তো আওয়ামী শাসন চলে না, আইনের শাসন চলে।

মির্জা আলমগীর বলেন, যে দেশে (বৃটেন) বাংলাদেশের মতো কোন নির্বাচনই রক্ত নয়, যে দেশের কোন নির্বাচনই জালিয়াতির ওপর সাজানো নয় এবং কল্পনাতীত গুণ্ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন করার যাদের কোন ঐতিহ্য নেই, সেখানে শাসকগোষ্ঠী ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার জেদে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করতে পারে না, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করার জন্য খড়গ ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে না, আবার পছন্দের কেউ অন্যায় করলে তাকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। তাই লন্ডনে বসে তারেক রহমান হত্যার হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন সেটা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশ ও বিদেশের কোন মানুষই কখনোই কোনদিন শোনেনি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ক্রসফায়ারের হুমকির কথা শুনেছে, প্রধানমন্ত্রীর তর্জন-গর্জন শুনতে শুনতে এদেশের মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়ার পর পুলিশ হত্যার লাইসেন্স পেয়ে যায়। পুলিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্রসফায়ারের হুমকিকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করে। যার শিকার হয়ে ব্যাংকার, ছাত্রসহ সাধারণ মানুষও ভয়াবহ পুলিশি নির্যাতনে পিষ্ট হচ্ছে।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার এই কুৎসামূলক আক্রমণের গুঢ় রহস্য হচ্ছেন গত কয়েকদিন ধরে গণগ্রেপ্তার ও ক্রসফায়ার নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের যে ক্ষোভ জন্মেছে সেটিকে আড়াল করা। জঙ্গি দমনের নামে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে যে হিংস্র পাশবিকতা ও দমন নীতি চালানো হয়েছে এবং ক্রসফায়ারে হত্যায় যে রহস্য দানা বেঁধেছে সেখান থেকে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া।

তিনি বলেন,  শেখ হাসিনা হাজারো কুৎসা ও মিথ্যা প্রচারণা চালানোর পরও তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি মজবুত আসন করে নিয়েছেন, যা অন্য কেউ পারেনি। আওয়ামী শাসকবর্গের হিংস্ররূপ নগ্ন করার পরও তারেক রহমানকে বিপর্যস্ত ও কাবু করা যায়নি। নানা অপপ্রচারের ধূম্রজাল সৃষ্টি করে সমস্ত হিংস্রতা দিয়ে তারেক রহমানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েও সরকার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়ে পাগলের প্রলাপ বকে যাচ্ছে।

শনিবার তারেক রহমান সম্পর্কে  প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অহংকার, ঔদ্ধত্য ও অপরিণামদর্শী। তাঁর এই বক্তব্য দেশের মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। তাঁর এই বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে বিচ্ছেদ, বিনাশ ও ব্যবধানের মাত্রা বাড়িয়ে তুলবে। রাজনৈতিক সঠিকতা অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরণের বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মির্জা আলমগীর।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইসচেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান,  সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহ দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

 

নিউজবাংলা/ একে         

Share This:

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*