নিউজবাংলা: বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন:

ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে চলতি বছরেই পাঁচ লাখ শ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মালয়েশিয়া।

বুধবার মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় দু’দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত এসেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।



এর আগে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে নেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও লোক নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মালয়েশিয়া। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া যান।

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম বাজার মালয়েশিয়া। তবে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি। দীর্ঘ কূটনৈতিক যোগাযোগের পর ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে সরকারিভাবে কর্মী নেওয়ার চুক্তি হয়। এরপর মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের ১৪ লাখ ৫০ হাজার লোক নিবন্ধন করেন। কিন্তু গত তিন বছরে মাত্র সাড়ে সাত হাজার কর্মী নিয়েছে দেশটি। অথচ একই সময়ে ছাত্র ও পর্যটক সেজে সেখানে গেছেন অন্তত এক লাখ লোক। আর বঙ্গোপসাগর দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছে দেড় লাখ মানুষ। সম্প্রতি থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় গণকবর আবিষ্কার এবং এ নিয়ে হইচই শুরুর পর আবার বেসরকারিভাবে কর্মী নেওয়ার প্রস্তাব দিল মালয়েশিয়া।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার, আইন মন্ত্রণালয়ের ড্রাফট উইংয়ের সচিব শহিদুল ইসলাম, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বেগম শামছুন নাহার এবং প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর একান্ত সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন।

জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রা সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে এই সফরে থাকার সুযোগ না পেলেও বায়রার সভাপতি আবুল বাসার এবং মহাসচিব মনসুর আহমেদও মালয়েশিয়া সফরে গেছেন।

জনশক্তি রপ্তানিকারকেরা অবশ্য শুরু থেকেই সরকারিভাবে লোক পাঠানোর বিরুদ্ধে ছিল। ২০১২ সালে এ প্রক্রিয়া শুরুর পর তারা প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর পদত্যাগও চেয়েছিল। একপর্যায়ে তারা কর্মী পাঠানো বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘট শুরু করে। কিন্তু খন্দকার মোশাররফ তাঁর অবস্থানে অনড় ছিলেন।

মন্ত্রণালয় ও বায়রা সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়া সরকারিভাবে লোক নেওয়ার চুক্তি করলেও সে অনুযায়ী চাহিদাপত্র পাঠায়নি। উল্টো তারা অবৈধভাবে যাওয়া লোকদের কাজ দিয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের বৈধ বাজার যেমন সংকুচিত হয়েছে, তেমনি অবৈধভাবে যাওয়া উৎসাহিত হয়েছে।

জনশক্তি রপ্তানিকারক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথ সংকুচিত হওয়ায় অবৈধভাবে কর্মী পাঠানোর সুযোগ নিচ্ছে দালালেরা। যাওয়ার আগে টাকা লাগে না, আবার কোনো রকমে পৌঁছালেই কাজ মিলছে—দালালদের এমন প্রলোভনে পা দিচ্ছে সহজ-সরল মানুষ।

 

 

নিউজবাংলা/একে