নিউজবাংলা: সোমবার, ২৯জুন:

মো.নজরুল ইসলাম ,মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শালিয়াবহ গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলির ছেলে আ.জলিল (৩৫)। সে বার বার অসহায় নারীদের ধর্ষণ করে অবৈধ সন্তান জন্ম দিয়েও টাকার জোরে সমাজে বহাল তবিয়তে রয়েছে।

১৫ বছর আগে কাজের মেয়ে লাখী বেগমকে একাধিকবার ধর্ষণ করে পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ার পর এবারও বাড়ির কাজের মেয়ে হালিমার ষোড়শী মেয়ে সালমিনাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অসংখ্যবার ধর্ষণ করে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। লাখীর ছেলে নাজমুলের বয়স এখন ১৫ বছর এবং সালমিনার মেয়ে জেনিয়ার বয়স সাড়ে চার বছর। নাজমুল শালিয়াবহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করে বর্তমানে শালিয়াবহ হাফেজিয়া মাদরাসায় ৩০ পারা কোরআনের হাফেজ হয়েছে।

সরেজমিনে শালিয়াবহ গ্রামে গিয়ে আ.জলিলের লালসার শিকার নারীদ্বয়,জলিলের ভাবী,পড়শি মহিলা,সালমিনার মা,স্থানীয় মাতাব্বর ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জলিলের নারী লালসার নানা কাহিনী জানা যায়। শালিয়াবহ গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর নূরুল ইসলামের মেয়ে মোছা. লাখী বেগম (৩০) ১৫ বছর আগে জলিলের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতো। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জলিল লাখীকে ধর্ষণ করলে সে গর্ভবতী হয়। পরে লাখী গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয়ে আদালতে মামলা করে। প্রভাবশালীদের চাপে ১৯৯৮ সালে মাত্র ১০ হাজার টাকা জরিমানায় লাখী আপোস হয়।

জন্ম নিবন্ধন কার্ড ও বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিষ্টারে নাজমুলের পিতার নাম আ. জলিল লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শালিয়াবহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম। কয়েক বছর পর আবার একই গ্রামের দরিদ্র আ.সামাদের মেয়ে মোছা. সালমিনা (১৬) কন্যা সন্তান জেনিয়া (৪)কে নিয়ে পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। সালমিনা জলিলের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী সমাজপতিরা সন্তান দু’টি জলিলের নয় দাবি করে উল্টো সালমিনাকে এলাকা ছাড়ার পাঁয়তারা করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,সালমিনার মা হালিমা বেগম দীর্ঘদিন জলিলের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতো। টাকা-পয়সাও জিনিসপত্রের লোভ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল জলিল।অবশেষে বিয়ে করার প্রলোভনে সালমিনাকে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে। সালমিনা জানান, আ. জলিলের পরামর্শে আমি স্বামী সাইদুলকে ১০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে ডিভোর্স দেওয়ার পর থেকে জলিল আমার সাথে মেলামেশা করতে থাকে। ফলে আমি ১৪ অক্টোবর ২০১০ এ গর্ভবতী হয়ে পড়ি। কিন্তু জলিল কাজীকে টাকা পয়সা দিয়ে ভূয়া তালাকনামা তৈরী করে বাচ্চাটি জলিলে নয় বলে প্রমাণ করার পায়তারা করছে। আমি আমার মেয়ে জেনিয়ার পিতৃ পরিচয় চাই।
সালমিনা আরো জানান,ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমানিত হওয়ার পর মামলা কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।

আ.জলিল (৩৫)। সে বার বার অসহায় নারীদের ধর্ষণ করে অবৈধ সন্তান জন্ম দিয়েও টাকার জোরে সমাজে বহাল তবিয়তে রয়েছে

অভিযুক্ত আ. জলিল মাতব্বরের মাধ্যমে টাকা পয়সার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র।

নিউজবাংলা/একে