নিউজবাংলা: ১০ জুলাই,শুক্রবার :
ঢাকা: ইসলামি অনুষ্ঠান ‘কাফেলা’র উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত
একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন কথা বললেও এর ফলাফল ‘শূন্য’।
২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট রাতে নিজ বাসায় খুন হন জনপ্রিয় এই উপস্থাপক ও ইসলামি নেতা। হত্যাকাণ্ডের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো আসামিদের ‘সনাক্তকরণ’ এর কাজটিই শেষ করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ৭ দিন পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, পুলিশ নিশ্চিত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত করেছে। কারণ হিসেবে ধর্মীয় মতাদর্শগত পার্থক্য। তাদেরকে সনাক্তের কাজ চলছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
তবে হত্যাকাণ্ডের ৩০০ দিন পরেও সনাক্ত হয়নি হত্যাকারীরা। এ বিষয়ে নিহতের মেঝ ছেলে আহমেদ রেজা ফারুকী বলেন, তদন্তের সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পুলিশ আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো। তবে এখন আর করে না। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আমাদের কিছুই জানানো হয়না। আমাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে খুনিদের গ্রেফতারের বিষয়ে আশ্বস্ত করে পুলিশ। বলে, ‘আমরা চেষ্টা করছি’।
ডিবি উত্তরের একটি দল এই মামলাটির তদন্ত করলেও সম্প্রতি পশ্চিম টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে ডিবি পশ্চিম জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় খুনিরা প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে। আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে তদন্ত করছি দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করতে পারবো।
এর আগে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার দেখায় ডিবি পুলিশ। এদের মধ্যে একজন ছাত্র, একজন গৃহিনী এবং একজন আহলে হাদিসের নেতা। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন তদন্তের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এক ডিবি কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘সন্দেহভাজন আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তাদের কেউই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয় বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।’
নিহতের ভাগ্নের বরাত দিয়ে ওই কর্মকর্তা আরো জানান, হত্যার আগে খুনিরা ৩-৪ বার ফোনে কথা বলেছিল। এঘটনা তদন্তে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ফোন নম্বর ও কললিস্ট যাচাই বাছাই করা হয়েছে। তবে সেই কলগুলোর নম্বর আমরা পাইনি। ধারণা করা হচ্ছে ভাইবার, স্কাইপি বা ফেসবুকের মাধ্যমে কল করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে তদন্ত এগোচ্ছে না।’
তদন্তের অগ্রগতি দেখে হতাশ রেজা ফারুকী বলেন, ইসলামী ছাত্র সেনার পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা করা হয়েছিল। এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্যেও কেন গ্রেফতার করা হল না বোধগম্য হচ্ছে না।
এক পর্যায়ে তদন্তের গতি বৃদ্ধির জন্য উচ্চ আদালতে রিট আবেদনের পদক্ষেপ নিয়েছিল ফারুকী পরিবার। তবে পুলিশ এর আগেই আদালত থেকে তদন্তের জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে নিয়েছে বলে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা।