নিউজবাংলা: ১২ জুলাই, রোববার :

ঢাকা: আজ যে আমির, কাল সে ফকির। নিয়তিবাদীদের এই কথাই যেন সত্যি প্রমাণ করলেন ভারতের এক ক্রিকেটার।

ভালাজি দামোর। ১৯৯৮ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের তারকা ছিলেন ইনি।

তত্‍‌কালীন রাষ্ট্রপতি কে আর নারায়ণান-এর কাছ থেকে পুরস্কারও পেয়েছিলেন। কিন্তু যে অল রাউন্ডার ১৯৯৮ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে সেমি ফাইনালে নিয়ে যান, তিনি এখন খেলার মাঠ থেকে বহু ক্রোশ দূরে। তার বর্তমান পেশা মহিষ চরানো এবং ক্ষেতে টুকটাক কাজ করা। এই করেই কোনোক্রমে দিন গুজরান হয় এককালীন ক্রিকেট তারকার।

৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ট্র্যাক রেকর্ডও তারিফযোগ্য। ১২৫টি ম্যাচে ৩১২৫ রান, ১৫০টা উইকেট। এখনও পর্যন্ত ইনিই ভারতের সব থেকে বেশি সংখ্যক উইকেট টেকার। তার প্রতিবন্ধকতা তার সাফল্যের মাঝে আসতে পারেনি। হ্যাঁ, ভালাজি দামোর মোট আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু জীবনের স্লগ ওভারে পৌঁছে আর ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি তার। তাই তো দৃষ্টিহীনদের জন্যে বিশ্বের প্রথম ওয়ার্ল্ড কাপে যিনি ভারতকে সেমি ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি এখন ক্ষেতের মাটি মেখে কোনও ক্রমে দিন কাটান। দারিদ্র এখন তার নিত্যসঙ্গী।

 

 

ভালাজি দামোর-এর স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপে ওই রকম পারফর্ম্যান্সের পরে ভালো চাকরির অফার আসবে তার কাছে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। হ্যান্ডিক্যাপড অথবা স্পোর্টস কোটায় চাকরির পরিবর্তে তার বরাতে জুটেছিল গুজরাট সরকারের তরফে একটি মানপত্র।

একটা সময় ছিল যখন দলে তার সঙ্গীরা তাকে শচিন টেন্ডুলকার নামে ডাকতেন। কিন্তু আজ তার হাতে ক্রিকেট ব্যাট নয়, রয়েছে হাল। আরাবল্লী জেলার পিপরানা গ্রামে এক একর জমিতে ভাইয়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ক্ষেতে চাষ করেন ভালাজি। মাঝেমধ্যে আবার অভাব মেটাতে কাজ করতে হয় অন্যের জমিতেও। পরিবারে যাতে দু`বেলা খাবারের পাত পড়ে তাই ভালাজি’র স্ত্রীও ক্ষেতে দিন মজুরের কাজ করেন। ঘরের ছাদ থেকে টালি খসে পড়া চার দেওয়ালে এখনও ম্লান উপস্থিতি বিগত দিনের এক স্টার ক্রিকেটারের পাওয়া নানা পুরস্কার ও মানপত্রের।

নিউজবাংলা/একে