নিউজবাংলা: ১৪ আগস্ট, শুক্রবার:
ঢাকা: কংগ্রেস ও বামকে ‘একঘরে’ করে এ মাসের শেষেই সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে পণ্য ও পরিষেবা করের মতো সংস্কারের বিলটি পাশ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।

 

বৃহস্পতিবার সংসদের শেষ দিনের অধিবেশন শুরুর আগেই প্রধানমন্ত্রী এনডিএ-র শরিক নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। মন্ত্রিসভার সংসদীয় বিষয়ক কমিটির বৈঠকও হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, সংসদের অধিবেশন এদিন মুলতুবি হয়ে গেলেও বিল পাশের বিষয়টিকে আপাতত জিইয়ে রাখা হবে। সরকারের সূত্রের মতে, ৩১ আগস্ট থেকে পাঁচ দিনের জন্য সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হতে পারে। যদিও সাংবাদিক সম্মেলনে অরুণ জেটলি বিষয়টি খোলসা করতে চাননি। তবে বলেছেন, পণ্য ও পরিষেবা কর বিলটি শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত পিছিয়ে দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এটিকে চালু করা যাবে না। অথচ সরকার এই বিল পাশ করাতে বদ্ধপরিকর।
কিন্তু সমস্যা হলো, সেই অধিবেশন ডাকা হলেও কংগ্রেস যদি একই ভাবে সংসদ ভণ্ডুল করে দেয়, তখন কী হবে? সরকার কী মার্শাল ডেকে কংগ্রেস সাংসদদের বের করে দেবে, ঠিক যে ভাবে কংগ্রেস মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের সময় করেছিল?

বিজেপি নেতৃত্ব এখনই তাদের কৌশল খুলে বলতে চাইছে না। তবে দলের নেতাদের মতে, রাজনৈতিক ভাবে কংগ্রেসকে একঘরে করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ দিন দলের বৈঠকে বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস জরুরি অবস্থার মানসিকতা নিয়ে চলছে। রাজনীতিকে একেবারে নিচুতলায় নামিয়ে ফেলেছে। লোকসভায় হার হজম হচ্ছে না। ওদের মুখোশ খুলতে হবে।’’ এর পরেই স্থির হয়, মোদি সরকারের মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা প্রচার করবেন, কী ভাবে কংগ্রেস গণতন্ত্র ও দেশের উন্নয়নের জন্য হানিকারক। এ দিন মোদী বাদে বিজেপি এবং এনডিএ-র সব শীর্ষ নেতারাও দিল্লির বিজয় চক থেকে সংসদের গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত মিছিল করেন। ওই মিছিলে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা সুষমা স্বরাজও ছিলেন। প্ল্যাকার্ড হাতে ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানিও।

কিন্তু সংসদের এই বিশেষ অধিবেশন নিয়ে কংগ্রেস কী ভাবছে?

কংগ্রেসও সহজে হাল ছাড়তে চাইছে না। এ দিনও রাহুল গান্ধী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সংসদে ব্যপম নিয়ে হাঙ্গামার পর পরেই তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনেও যান। বিকেলে চিদম্বরমকে দিয়েও সাংবাদিক সম্মেলন করানো হয়। কংগ্রেসও এখন সংসদে পাওয়া গতিকে সড়কে নিয়ে যেতে চাইছে। জল মাপতে চাইছে, বিজেপি কতটা আক্রমণাত্মক মনোভাব নেয় ও জনতার মধ্যে তার কী প্রভাব পড়ে। সেটি বুঝেই পরবর্তী পদক্ষেপ করতে চাইছে কংগ্রেস। তবে বিজেপি এখন থেকেই যে ভাবে কংগ্রেসের গায়ে সংস্কার-বিরোধী তকমা এঁটে দিতে চাইছে, তা মোকাবিলা করার জন্য এদিন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরমকে কাজে লাগানো হয়।

চিদম্বরম বলেন, পণ্য ও পরিষেবা কর কংগ্রেসই এনেছিল। কিন্তু সে সময় বিজেপি বাধা দিয়েছিল। আজ যে শিল্পপতিরা সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করছেন, তারাই সেই সময় বিজেপি-র সমালোচনা করতেন। পণ্য ও পরিষেবা কর নিয়ে কংগ্রেস মূলত ছ’টি আপত্তি তুলেছে। তার মধ্যে তিনটি প্রস্তাব সরকার মেনে নিলে কংগ্রেস এখনই এই বিল পাশ করাতে রাজি। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, কংগ্রেসের এই আপাত সুর নরম আসলে চাপের মুখেই হয়েছে। এবার তা আরও বাড়ানো হবে। জেটলি বলেন, ‘‘কংগ্রেস দেখাল, একটি পরিবারের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে তারা দেশের স্বার্থ ও নীতিকে জলাঞ্জলি দিতে পারে। এই প্রথম সোনিয়া গান্ধীর মতো মূলস্রোতের দলের বড় নেতা ওয়েলে নেমে এলেন। রাহুল গান্ধী যত বড় হচ্ছেন, তত অপরিক্কতা দেখাচ্ছেন। শুধু শরীরের ভাষায় আগ্রাসন দেখালেই হয় না, বক্তব্যে ওজন থাকা দরকার।

নিউজবাংলা/একে