এছাড়া টমেটোর দাম ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিকেজি কাঁচামরিচের দাম ৮০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪০ টাকায়। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে শ্যামবাজারে ব্যবসায়িদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, কিছুদিন আগে দেশে বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টির পানিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক শাক-সব্জির বাগান তলিয়ে যায়। এসব বাগান ঠিক হতে সময় লাগবে। আর এর রেশটা থাকছে দেশের কাঁচাবাজারে। তাই পণ্যের দর সহসাই কমছে না।
শ্যামবাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায়িদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু আমদানি খুব বেশি বাড়ছে না। তবে ভারতের পেঁয়াজের দাম কমলে দেশের বাজারে পেয়াজের দর আরও কমবে বলে জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার শ্যামবাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় বড় পেঁয়াজ ৪৭ টাকা থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকায়। ছোট পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা থেকে ৪৬ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৪৮ টাকা থেকে ৫২ টাকায় (গত সপ্তাহে ছিল ৫৩ টাকা থেকে ৫৪ টাকা) পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা থেকে ৫৮ টাকায়, ভারতীয় বড় পেঁয়াজ ৫৪ টাকা থেকে ৫৫ টাকায়, ছোট পেঁয়াজ ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি দেশি রসূন ৬০ টাকায়, ভারত থেকে আমদানি করা রসুন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি রসুন ৫০ টাকায়, আমদানি করা রসুন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শ্যামবাজারের পাইকারী পেঁয়াজ ব্যবসায়ি রুনা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ইলিয়াস বাংলামেইলকে জানান, কিছুদিন আগের ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেখানে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। তখন ভারতের পেঁয়াজ আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। যার রেশ এখনো কাটেনি। বাজারে ভারতীয় পেয়াজের আমদানি খরচ কম পড়লেই দেশের পেঁয়াজের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করেন তিনি।
অপর পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বরিশাল বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী শাহীন হাওলাদার জানান, দেশে তো এখন পেঁয়াজ উৎপাদনের সময় না। যতই দিন যাচ্ছে পেঁয়াজের ততই চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু উৎপাদন তো বাড়ছে না। আমাদেরকে অন্য দেশের পেঁয়াজের উপর নির্ভর করতে হয়। সেসব দেশ থেকে আমাদের দেশে পেঁয়াজ না আসলে দাম অনেক বেশি থাকতো। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার যাত্রবাড়ী, দয়াগঞ্জ, কাপ্তান বাজার, সেগুনবাগিচা খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি লাল লম্বা বেগুন ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় (গত সপ্তাহে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হতো), সাদা গোলাকার বেগুন ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় ( এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা), মরিচ ১৪০ টাকা (এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা), শশা ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা (এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা), গাজর ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, ধনিয়া পাতা ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, পেপে ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা (এক সপ্তাহ আগে ছিল ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা), করলা ৫৫ টাকা ৬০ টাকা, ভেন্ডি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, কাকরল ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় (এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা), জিঙ্গা ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, সাদা গোল আলু ২৪ টাকায়, লাল গোল আলু ২৫ টাকায়, দুন্দুল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, কচুর ছড়ি ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা (এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা) , মূলা ৩৫ টাকা থেকে ৪৫ টাকায়, বটবটি ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায়, কহি ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকায়, ওস্তা ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, পটল ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, গাজর ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, লতি ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায়, সীম ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি সাদা ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, লাল মুরগি ১৮০ টাকা থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস: খুচরা বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৮০টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে ডিমের দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতি হালি ব্রয়লার মুরগির লাল ডিমের পাইকারী দাম ৩৫ টাকা থেকে ৩৬। যা খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৪৬ টাকা থেকে ৪৮ টাকায় (এক সপ্তাহ আগে ৪৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকা) বিক্রি হচ্ছে, যা পাইকারি বাজারে ৪২ টাকা বিক্রি হচ্ছে (এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা)।