নিউজবাংলা: ১৪ আগস্ট, শুক্রবার:
সিলেট: প্রেমিক সিএনজিচালক খালেদের জন্য আদালতে গেলেন সিলেটের আলোচিত বধূ ফারজানা আক্তার শিফা। জানালেন, ‘তিনি খালেদকে ভালবাসেন। দুই জনের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সূত্র ধরে বিয়ে করেছেন।

এর আগে তিনি পূর্বের স্বামী সৌদি প্রবাসী মজিরউদ্দিন তালুকদারকে ডিভোর্স দিয়েছেন। এসব কথা জানিয়ে তিনি আদালতে নতুন স্বামী খালেদের মুক্তি চান। আদালত শিফার কথা শুনে খালেদের জামিন মঞ্জুর করেননি। শিফা অপহরণ মামলার বাদী পিতা আবদুল মান্নানকে আদালতে তলব করেছেন। আগামী ৩১শে আগস্ট আদালতে এ মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শিফার প্রেমিক ও নতুন স্বামী সিএনজিচালক খালেদ আহমদ ১ মাস ২৭ দিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। এরই মধ্যে ঘটে গেছে আরও অনেক ঘটনা। ১৭ই জুন গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে পলাতক থাকা শিফা উদ্ধার ও খালেদকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ দুই জনকে আদালতে হাজির করেছিলো। এর আগে শিফার ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়। ওই সময় শিফা আদালতে জানিয়েছিলো খালেদ তাকে অপহরণ করেছে। জোরপূর্বক তাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অপহরণ করা হয়েছিলো বলে আদালতে জানায় সে। শিফার ওই বক্তব্যের পর আদালত প্রেমিক খালেদকে কারাগারে পাঠিয়েছিলো। আর ফারজানা আক্তার শিফা চলে যান পিতা আবদুল মান্নানের বাড়ি গোলাপগঞ্জের লক্ষণাবন্দ গ্রামে। এরপর খালেদের পরিবার একাধিকবার জামিন আবেদন করলেও খালেদের জামিন হয়নি। এই অবস্থায় গত ২৭শে জুলাই পিতার বাড়ি থেকে প্রেমিক খালেদের বাড়িতে চলে আসে ফারজানা আক্তার শিফা। সঙ্গে নিয়ে আসে তার চার বছরের কোলের শিশু সাফিকে। এরপর খালেদের জামিনের জন্য শিফাকে নিয়েই তার পরিবার প্রচেষ্টা শুরু করে। বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগর জজ আদালতে ছিলো খালেদের জামিন শুনানি। আদালতে শুনানিকালে উপস্থিত হন ফারজানা আক্তার শিফা। আদালতে তিনিও খালেদের বিচারের জন্য সুপারিশ করে বলেন, খালেদকে তিনি ভালবাসেন। এ কারণে পূর্বের স্বামী মজিরউদ্দিন তালুকদারকে ডিভোর্স দিয়ে তারা বিয়ে করেছেন। এখন তিনি খালেদের বাড়িতে রয়েছেন। আদালত শিফার বক্তব্য শুনলেও খালেদের জামিন দেননি। আগামী ৩১শে আগস্ট আদালত অপহরণ মামলার বাদী ও শিফার পিতা আব্দুল মান্নানকে তলব করেছেন। ওই দিন আদালতে প্রেমিক ও নতুন স্বামী খালেদের জামিনের জন্য পিতার মুখোমুখি হবেন শিফা। সিলেটের ফারজানা আক্তার শিফার সাজানো সংসার ছিলো। দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজারের কান্দেবপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী মজিরউদ্দিন তালুকদারের সঙ্গে তার বিয়ে হয় ১১ বছর আগে। তাদের ঘরে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। মজিরউদ্দিন জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে থাকায় পারিবারিক সিএনজিচালক খালেদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো শিফার। প্রায় তিন বছর প্রেম ও অভিসার চলার পর গত ৯ই জুন শিফা প্রেমিক খালেদের সঙ্গে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। সঙ্গে নিয়ে যায় শিশুপুত্র সাফিকেও। আর পালিয়ে যাওয়ার দিনই সিলেটের আদালতের আইনজীবীর মাধ্যমে এফিডেভিট করে পূর্বের স্বামী সৌদি প্রবাসী মজিরউদ্দিন তালুকদারকে ডিভোর্স দেন। ওই দিন তিনি এফিডেভিট করে বিয়ে করেন খালেদকে। এরপর ১৫ই জুন গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন। ওদিকে শিফা পালিয়ে যাওয়ার পর পিতা আবদুল মান্নান মোগলাবাজার থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় খালেদ ছাড়াও তার পিতা মঞ্জু মিয়াকে আসামি করা হয়। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে কোনাবাড়ি এলাকা থেকে ১৭ই জুন শিফাকে উদ্ধার এবং গ্রেপ্তার করে প্রেমিক খালেদকে। ওদিকে, উদ্ধারের পর শিফা আদালতে জানিয়েছিলো খালেদ তাকে অপহরণ করেছেন। ফলে আদালত খালেদকে কারাগারে পাঠিয়ে শিফাকে পিতার জিম্মায় দিয়েছিলেন। পিতার বাড়িতে থেকে পালিয়ে গিয়ে শিফা এখন প্রেমিক ও নতুন স্বামী খালেদের জামিনের জন্য গতকাল সিলেটের আদালত পর্যন্ত ছুটে এসেছেন। আগামী তারিখে প্রেমিক খালেদের পক্ষ নিয়ে শিফা হবেন পিতা আবদুল মান্নানের মুখোমুখি।

নিউজবাংলা/একে