নিউজবাংলা: ১৪ আগস্ট, শুক্রবার:

ঢাকা: ‘মিশন ইমপসিবল-রোগ নেশন’ ছবিতে কাজের আগে রেবেকা ফার্গুসনকে চেনার চেষ্টা করেছে কে! ‘মিশন ইমপসিবল’ সিরিজের নতুন পর্বে তার দুর্দান্ত অভিনয়ের সুবাদে রাতারাতি ভক্ত বেড়ে গেছে তার। কেউ কেউ তো বলছেন, ছবিটিতে টম ক্রুজকেও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি! এই সিরিজে এবারই প্রথম কোনো নায়িকা এতো আলোচনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।

‘মিশন ইমপসিবল’ সিরিজের আগের ছবিগুলোতে নায়িকারা সাধারণত কোমল স্বভাবের ছিলেন। মাঝে মধ্যে হয়তো কেউ একটু-আধটু চালাকি করতে পেরেছেন। কিন্তু রেবেকা ছাপিয়ে গেছেন তাদের সবাইকে। অবশ্য চিত্রনাট্যে তার জন্য সুযোগটা সাজানোই ছিলো। পানির বিশাল ফোয়ারায় ঝাঁপ দিয়ে গোয়েন্দা ইথান হান্টকে বাঁচানো, আবার তার চোখে ধূলো দিয়ে কাজ হাসিল করে চলে যাওয়া, রুদ্ধশ্বাস গতিতে ব্যস্ত সড়কে মোটরসাইকেল চালানো, ভিলেনদের বোকা বানিয়ে রাখা- সবকিছুতেই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন অসাধারণ দক্ষতায়। সারা ছবিতে তার সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে কিংবা তার পাল্লায় পড়লেই ধরাশায়ী হয়েছে সবাই।

বিবিসির মিনি সিরিজ ‘দ্য হোয়াইট কুইন’-এ (২০১৩) রানী এলিজাবেথ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় দেখে রেবেকাকে নির্বাচন করেন টম ক্রুজ। তবে কাজটা ৩২ বছর বয়সী এই সুইডিশ অভিনেত্রীর জন্য চ্যালেঞ্জ ছিলো। কারণ ছবিটিতে নিজের সব স্টান্ট নিজেকেই করতে হয়েছে তাকে। এজন্য টানা ছয় সপ্তাহ দিনে ছয় ঘণ্টা করে ফিটনেস সতেজ রাখা ও স্টান্ট প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।

আকর্ষণীয় সাদৃশ্যের জন্য সুইডিশ অভিনেত্রী ইনগ্রিড বার্গম্যানের সঙ্গে রেবেকার তুলনা করা হয়। ‘মিশন ইমপসিবল-রোগ নেশন’ ছবিতে তার চরিত্রের নাম ইলসা। মজার বিষয় হলো- ‘ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা’য় (১৯৪২) ইনগ্রিডও ইলসা নামের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ‘মিশন ইমপসিবল’ সিরিজের পঞ্চম কিস্তির কয়েকটি দৃশ্যের চিত্রায়ন হয়েছে মরক্কোর ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা শহরে।

রেবেকা ফার্গুসনের টুকিটাকি
* পুরো নাম রেবেকা লুইসা ফার্গুসন। উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। তিনি বেড়ে উঠেছেন স্টকহোমের ভ্যাসাস্তাদেন জেলায়।

* রেবেকার তিন বোন। তাদের মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। মা রোজম্যারি ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্যতম সদস্য সারাহ ফার্গুসনের আত্মীয়। ২৫ বছর বয়সে সুইডেনে পাড়ি জমান রোজম্যারি।

* অভিনেত্রী হলেও রেবেকা পড়াশোনা করেছেন মিউজিক স্কুলে। ১৯৯৯ সালে অ্যাডলফ ফ্রেডরিক্স মিউজিকস্কুল থেকে স্নাতক পান তিনি।

* অল্প বয়স থেকেই নৃত্যচর্চা করেছেন রেবেকা। ব্যালে, ট্যাপ ড্যান্সিং, জ্যাজ/শো, স্ট্রিট ফাঙ্ক থেকে আর্জেন্টাইন ট্যাঙ্গো- সব নাচেই তিনি দক্ষ। ট্যাঙ্গোর প্রতি দুর্বলতা থাকায় সুইডেনের লান্ড শহরে এই নাচের কোর্সে নতুনদের তালিম দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি।

* প্রথম সুইডিশ অভিনেত্রী হিসেবে ১৯৯৯ সালের পর গত বছর গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত হন রেবেকা। ১৫ বছর আগে মনোনয়ন পেয়েছিলেন অ্যান-মার্গারেট। সুইডিশদের মধ্যে গ্লোবের জন্য মনোনীত হওয়া অন্য তিন অভিনেত্রী হলেন ইনগ্রিড বার্গম্যান, আনিতা ইকবার্গ ও লেনা ওলিন।

* ১৩ বছর বয়স থেকে ম্যাগাজিন, রূপসজ্জা, পোশাক ও অলঙ্কারের বিভিন্ন পণ্যের এবং টিভি ও চলচ্চিত্রের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন রেবেকা।

* ২০১১ সালে রেবেকাকে টাউন মার্কেটে দেখে ‘অ্যা ওয়ান-ওয়ে ট্রিপ টু অ্যান্টিবেস’ ছবির জন্য নির্বাচন করেন সুইডিশ পরিচালক রিচার্ড হবার্ট। অবশ্য তার আগে ‘ড্রোওনিং গোস্ট’ (২০০৪) এবং ‘ভাই’ (২০১৩) নামে দুটি সুইডিশ ছবিতে কাজ করেন রেবেকা।

* হলিউডে এর আগে ‘হারকিউলিস’ (২০১৪) ছবিতে অভিনয় করেছেন রেবেকা। এখন তার হাতে আছে ‘ডেসপাইট দ্য ফলিং স্নো’ এবং ‘ফ্লোরেন্স ফস্টার জেনকিন্স’ (মেরিল স্ট্রিপ, হিউ গ্র্যান্ট) ছবি দুটি।

* হেলেন মিরেন, ম্যাগি স্মিথ, হিউ লরি ও হেলেনা বোনহ্যাম কার্টারের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি।

* আবদ্ধতার অনুভূতিজনিত রোগ আছে রেবেকার। এ কারণেই প্রায়ই মাথায় ঝিম ধরে যায় তার।

* রেবেকার এক পুত্রসন্তান হয়েছে ২০০৭ সালে, নাম ইসাক। তার বাবা রেবেকার প্রেমিক লুডউইগ হলবার্গ।

* সোপ অপেরা ‘নায়া টাইডার’ (১৯৯৯-২০০১) সফল হওয়ার পর খ্যাতির বিড়ম্বনা এড়াতে শহুরে জীবন থেকে দূরে থাকছেন রেবেকা। সন্তান ও প্রেমিককে নিয়ে তিনি থাকেন সুইডিশ দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল সিমরিশামে।

নিউজবাংলা/একে