নিউজবাংলা: বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন:
ঢাকা: বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, এখানে অর্থমন্ত্রী নেই, প্রতিমন্ত্রী নেই তাহলে কার কাছে আলোচনা করবো। এই আলোচনা কি শুধু সংসদে রেকর্ডিং এর জন্য?

বাজেট আলোচনা তখনই অর্থবহ হয় যদি তিনি (অর্থমন্ত্রী) থাকতেন। বাজেটে ভুল ত্রুটি থাকে জনগণের পক্ষ থেকে আমরা সেই ভুলত্রুটি নিয়ে কথা বলি, কিন্তু এখন কার কাছে বলবো?

বৃহস্পাতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত (২০১৫-১৬) অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা সংসদে সেই বিরোধী দল হতে চাই যারা মানুষের পক্ষে কথা বলবে। আমরা ফাইল ছোড়াছুড়ি করতে চাই না। আপনাদের পক্ষে কথা বলতে চাই না। আপনাদের পক্ষে কথা বলার জন্য ২৫০ জন এমপি আছে। আমরা মানুষের মনের কথা বলতে চাই।

জিয়াউদ্দিন বাবুল বলেন, অর্থমন্ত্রী ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। বাজেটে ঘাটতি বাজেট ৮৬ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৫ শতাংশ। এই ঘাটতি বাজেট কিভাবে মেটানো হবে। প্রতি বছরই ঘাটতি বাজেট বাড়ছে। ঘাটতি বাজেট মানে কি দেশ সামনের দিকে যাচ্ছে। দেশ শক্তিশালী হচ্ছে। বরং বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতির দু’টো কম্পোনেন্ট। একটা মানি মার্কেট। আর অন্যটি ক্যাপিটাল মার্কেট। কিন্তু মানি মার্কেটে বিশৃঙ্খল অবস্থা। গত ৫/৬ বছরে বেসিক ব্যাংক থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। কারা এই টাকা লুটপাট করেছে। আজ পর্যন্ত কারো নাম বের হলো না। অনেক গুলো কমিটি হয়েছে। হলমার্ক বলেন, ডেসটিনি বলেন এসব প্রতিষ্ঠান যে টাকা লুটপাট করেছে সে টাকা সরকারের টাকা নয়, জনগণের টাকা। এনিয়ে তদন্ত রিপোর্ট পরিষ্কার হয় নাই।

প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা সরকারে আছেন জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়, জনগণের টাকা লুটপাট করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যও নয়। লুটপাট যাতে না হয় সেটা বন্ধ করার জন্য। এ পর্যন্ত যতো কমিটি করেছেন তাতে কিছুই হয়নি। একটি টাকাও আদায় করতে পারেননি। যারা দায়ী তাদের আইনের আওতায় আনতে পারেননি। আমরা বিরোধী দলের কেউ এই লুটপাটের টাকার দায় নিবো না। একদিন আপনাদেরকে এরজন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি বলেন, বাজেটে সরকারি ব্যাংকগুলোর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা রিপ্লেসমেন্ট করার সুযোগ দেওয়া হয়। এই টাকা দেওয়া হয়েছে লুটপাটের টাকা রিপ্লেসমেন্ট করার জন্য। মানুষের টাকা দিয়ে লুটের টাকা রিপ্লেসমেন্ট করতে পারেন না। এই ক্ষমতা আপনাকে কে দিয়েছে, জনগণ আপনাকে এই ক্ষমতা দেয়নি। এ বরাদ্দ বাতিল করতে হবে।

বাংলাদেশ হতে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারের বিষয়ে বলেন, গত ৩ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১২ সালে ১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা, ২০১৩ সালে ৩ হাজার ১৪৯ কোটি এবং ২০১৪ সালে ৪ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর সবই অবৈধ টাকা। যারা দেশের টাকা পাচার করলো তারা কারা। এদের নাম জানতে চাই। যারা টাকা পাচার করছেন তারা আপনার শত্রু, আমাদের শত্রু। এই, টাকা ফেরত আনতে হবে। পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

নিউজবাংলা/একে