নিউজবাংলা: সোমবার, ২৯জুন:

 নড়াইল: প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হওয়ার প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে ফেল করে দেওয়া নড়াইল

সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী ফারিয়া ইসলাম অবশেষে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কন্ট্রোলারের তত্ত্বাবধানে উত্তরপত্র বিশেষভাবে পুনর্মূল্যায়ন করে ওই ছাত্রীর এ ফলাফল রোববার (২৮ জুন) বিকেলে প্রকাশ হয়। মঙ্গলবার (২৯ জুন) এ ফলাফল জানাজানি হয়।

এদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষক ফসিয়ার রহমানকে ‘জনস্বার্থে’ নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বাগেরহাটের একটি সরকারি বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। তবে, তার অধিকতর শাস্তি দাবি করেছে সংশ্লিষ্টরা।

ফারিয়ার মা সাবিনা আক্তার শিল্পী জানান, ফারিয়া পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কখনও প্রথম, কখনও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে এসেছে। এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্মূল্যায়নে সে জিপিএ-৫ পেল। এতে অনেক খুশি হয়েছি। গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেলে আরো খুশি হতাম।
জিপিএ-৫ পাওয়ায় ফারিয়াও এখন অনেক খুশি।

নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনিরা সুলতানা জানান, শিক্ষক ফসিয়ার রহমানকে বাগেরহাটে বদলি করা হয়েছে। বদলির আদেশে ‘জনস্বার্থে’ বদলির কথা উল্লেখ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ফারিয়া নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। স্কুলে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় তিনজন ছাত্রী গোল্ডেন এ প্লাস পায়, তাদের মধ্যে ফারিয়া একজন।

পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, অন্য মেধাবী ছাত্রীদের ব্যবহারিক সব পরীক্ষায় ২৫ নম্বর করে দেওয়া হলেও কম্পিউটার শিটে পরিবর্তন এনে ফারিয়াকে পাঁচটি বিষয় ১৫ নম্বর দেওয়া হয়। ফেল করে দেওয়া হয় পদার্থ বিজ্ঞানে।

স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রীর অভিভাবক জানান, তিন বছর আগে ফসিয়ার রহমান নামে এক শিক্ষক নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে প্রায়ই ফারিয়াকে উত্যক্ত করতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ফসিয়ারকে মেহেরপুরের একটি বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। পরে, নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ফসিয়ার।

নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ফারিয়ার এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় এবং ফসিয়ার রহমান ওই কেন্দ্রের পরীক্ষা কমিটির সদস্য থাকায় অপকৌশলে ফারিয়াকে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ের উত্তরপত্র বিকৃত ভাবে জমা দেন। এতে ওই বিষয়ে ফেল করে ফারিয়া।

এ ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়লে অভিযুক্ত শিক্ষক ফসিয়ার রহমানের শাস্তির দাবিতে এবং তার উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে কয়েক দফায় নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ ঘটনায় গঠিত হয় দুটি তদন্ত কমিটি।

এছাড়া, গত ৬ জুন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে দেখা করে ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সদস্যরা। তাৎক্ষণিক শিক্ষামন্ত্রী বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি যাচাই ও ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় ফারিয়ার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে জিপিএ-৫ যায় সে।

নিউজবাংলা/একে