নিউজবাংলা: ২জুলাই, বৃহস্পতিবার:

আব্দুল্লাহ আল নোমান:
জামিনে মুক্তি পেয়ে এখনও টাঙ্গাইলে আসেন নি আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। পবিত্র হজ, তাবলিগ জামাত ও মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তিসহ ধর্ম অবমাননার বেশ কয়েকটি মামলায় প্রায় আট মাস কারাভোগের পর ২৯ জুন সোমবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।

মুক্তি পাওয়ার তিন দিন পার হলেও এখনও তিনি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তার এলাকায় আসেননি। যদিও তার মুক্তি পাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে সারাদেশে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। আবারও তাকে গ্রেফতার ও তার ফাঁসির দাবতি ফুঁসে উঠছে ধর্মপ্রাণ মানুষ। এসব বিষয় নিয়ে হয়তবা তিনি নিজেই হ-জ-ব-র-ল অবস্থায় আছেন। আর তার নিজ জেলার মানুষও বিশেষত যেখানকার আলো বাতাসে তিনি বড় হয়েছেন সেখানেও এর আগে তার ফাঁসির দাবিতে হয়েছে নানা কর্মসূচী। এসব বিষয় ভেবেই হয়তবা তিনি টাঙ্গাইলে আসেন নি বলে মনে করছেন অনেকেই।
তবে এখনও তার যারা ভক্ত রয়েছেন তার না আসা নিয়ে কিন্তু হতাশ। তাদের প্রিয় নেতা তাদের সামনে এসে করমর্দন করবে এ অপেক্ষায় এখনও রয়েছেন তারা।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার টাঙ্গাইলে কালিহাতীর নিজ বাড়িতে আসার কথা ছিল সাবেক এই মন্ত্রীর। তবে বুধবার পেরিয়ে গেলেও তিনি কেন বাড়ি ফেরননি এর কারণ বলতে পারেনি তার স্বজনরা। তিনি ঢাকায় আছেন নিশ্চিত করলেও ঢাকার নিজ বাসা নাকি এমপি হোস্টেলে ওঠেছেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউ। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় হেভিওয়েট নেতা বলেন, দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগের কেউ নন। আর বহিষ্কৃত নেতাকে নিয়ে সংবর্ধনা বা বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিলে আয়োজকদের নিজেদের অবস্থানই নড়বড়ে হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে তার নিকটজনেরা জানতেন মঙ্গলবার কালিহাতীর নিজ বাড়িতে আসবেন সাবেক এই মন্ত্রী। এব্যাপারে কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মজহারুল তালুকদার ঠাণ্ডু বলেন, “সম্ভবত তিনি ঢাকায় আছেন। কালিহাতীতে তিনি কবে আসবেন এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো সংবাদ নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও কোনো বিশেষ আয়োজন করা হয়নি। তবে জামিন পেয়ে কালিহাতীতে না আসায় সাবেক এই মন্ত্রীর অতি উৎসাহী ভক্তদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
”প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে স্থানীয় টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। পরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে মোট ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১৭ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে তাকে অপসারণ করা হয়। এসময় আওয়ামী লীগও তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে ভারত হয়ে দেশে ফিরে ২৫ নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

 

নিউজবাংলা/একে