অরক্ষিত মধুপুর বন গবেষণা কেন্দ্রের চার শতাধিক একর জমি রাজনৈতিক নেতাদের দখলে
নিউজবাংলা: ২৫জুলাই, শনিবার :
মো. নজরুল ইসলাম, মধুপুর (টঙ্গাইল)প্রতিনিধি::
অরক্ষিত হয়ে পড়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন গবেষণা কেন্দ্র। ৪২ বছরে ৪৩৩ একর জমির মধ্যে ৪১৩ একর জমিই দখল হয়ে গেছে। বন গবেষণা কেন্দ্রের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আ’লীগ-বিএনপির নেতারা ইতোমধ্যেই ৪০৩ একর জমি দখল করে নিয়েছেন।
আর বন বিভাগের হয়ে ১০ একর জমি দখল করে সাবেক বনমন্ত্রী ঔষধি বাগান করেছেন। বাকি ২০ একর জমি নিয়ে কাগজের বাঘের মতো চলছে মধুপুর বন গবেষণা কেন্দ্র। সর্বশেষ ক্ষমতাসিন দলের উপজেলার প্রথম শ্রেণির ১০ জন নেতা ২ বছর আগে বন গবেষণা কেন্দ্রর শতাধিক একর জমি দখল করে নিয়েছে। সেই জবরদখলকৃত জমি হালাল করতে সাথী ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের নিকট লিখিত আবেদন করেছিলেন। এরই জের ধরে দখলদাররা জমির চারপাশ দিয়ে বাঁশের বেড়া দিলেও কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। আ’লীগনেতাদের জবরদখলকৃত জমি বৈধভাবে চাওয়ার আবেদনের পেক্ষিতে চট্রগ্রামস্থ বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের সিলভি কালচার্স বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.শহিদুল্যাহ ও চীপ রিসার্স অফিসার ড মো.খালেক মধুপুর বন গবেষণা কেন্দ্রে এসে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথে কথা বলেছিলেন। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঐ সময় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.শহিদুল্যাাহ বলেছিলেন,৪২৩ একর জমি দখল হয়ে গেছে এটা ঠিক নয়। রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে কিছুটা এদিক সেদিক হয়েছে। তবে ৩৫-৪০ একর জমিতে গবেষণা কেন্দ্রের পুরো নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। জবরদখলকৃত জমিতে বাঁশের বেড়া দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন,বেড়া দেয়া ঠিক হচ্ছে না,তবে তারা (দখলদাররা) আমাকে কথা দিয়েছে এমনটা আর করবে না। তিনি আরো জানান,অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ২টি মামলা হয়েছে।
মধুপুর বন গষেণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়,২শ টি দেশিয় প্রজাতি এবং ১২০টি বিদেশি প্রজাতির গাছের চারা নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে।
জানা যায়,৪২৩ একর জমির মধ্যে বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলের নেতারা নিয়েছে ২৯০ একর,বর্তমান ক্ষমতাসিন দলের নেতারা নিয়েছে ১০২ একর এবয় সাবেক বনমন্ত্রী শাহজাহান সিরাজ বন বিভাগের নামে ঔষধি বাগান করার কথা বলে নিয়েছেন ৮ একর জমি।
স্থানীয়রা জানান ৪২ বছরে মধুপুর বন গবেষণা কেন্দ্রের ফলাফল শূণ্যের কোঠায়। তবে গবেষনা কেন্দ্রে স্টেশন অফিসার আতিকুর রহমান বলেন,ফলাফল একবারে শূণ্য নয়,এই গবেষণা কেন্দ্র দেখিয়ে সরকার বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ আনছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন,সাবেক স্টেশন কর্মকর্তা সুব্রত দাস অফিসের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে গেইট পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।
মধুপুর উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো.সরোয়ার আলম খান আবু বলেন,আমাদেও সময়ে জবরদখল হয় নাই,যা বেদখল হয়েছে বিএনপির আমলেই হয়েছে।
মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.জাজির হোসেন সরকার বলেন,আমাদের কোন নেতাকর্মী অবৈধভাবে বন বিভাগের জমি দখল করেনি।
নিউজবাংলা/একে