নিউজবাংলা: ২৩আগষ্ট,রোববার

রাজশাহী: বনের শিয়াল লোকালয়ে আসতে শুরু করেছে। সামনে যাকেই পাচ্ছে তাকেই কামড়ে রক্তাক্ত জখম করছে। এতে রাজশাহীর বাগমারার গ্রামে পাগলা শিয়াল আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত দুইদিনে অন্তত ৩০ জনকে কামড়ে আহত করেছে শিয়াল।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। তারাও সংগঠিত হয়ে শিয়াল নিধনে নেমেছে। ইতোমধ্যে ১২টি শিয়াল তারা মেরে ফেলেছে।
এদিকে, তিন গ্রামের লোকজন একজোট হয়ে বিভিন্ন জঙ্গলে হানা দিচ্ছে। তারা এখন আত্মরক্ষার জন্য লাঠি, দাসহ নানা দেশীয় অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে চলাচল করছে। আহতদের কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার রাতে পূর্বদৌলতপুর গ্রামের সিয়ারুল ইসলাম (৩০) নামের এক ব্যক্তি প্রথমে পাগলা শিয়ালের আক্রমনের শিকার হন। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে কামড়িয়ে রক্তাক্ত করে। তার চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে শিয়ালগুলো দলবেঁধে আক্রমনের চেষ্টা চালায়। এসময় আরও কয়েকজন শিয়ালের থাবায় আক্রান্ত হয়। গত দুইদিনে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩০ জনকে কামড় দেয় পাগলা শিয়াল।

এদের মধ্যে সিয়ারুল ইসলাম নামের একটি ব্যক্তিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকের পরিচালক চিকিৎসক আবদুল বারী জানান, তিনি শিয়ালে কামড়ানো চার-পাঁচজন রোগিকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বেশ কয়েকজনকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন।
এদিকে, শিয়ালের আক্রমনের শিকার ওই গ্রামের আফাজ উদ্দিন, রেহেনা বেগম, সায়লেন, মকবুল হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে হঠাৎ বেশকিছু শিয়াল ফকিন্নী নদীর পাশে এসে জমা হয়। দিনের বেলা শিয়ালগুলো পূর্বদৌলতপুর গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গল ও ধানখেতেও আশ্রয় নেয়। আর রাতে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে লোকজনের ওপর আক্রমণ শুরু করে। দিনে শিয়াল দেখা না গেলেও সন্ধ্যার পর লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।

এ ঘটনার পর গ্রামের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারাও লাঠি সোঠা ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে চলাফেলা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে গ্রামের লোকজন ১২টি শিয়াল মেরে ফেলেছে।
শনিবার রাতেই পূর্বদৌলতপুর, গোড়সার ও হুলিখালী গ্রামের লোকজন সভা করে শিয়াল তাড়ানোর জন্য একজোট হয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা এলাকার জঙ্গল ও ঝোপ-ঝাড়ে অভিযান চালিয়ে শিয়াল তাড়ানোর অভিযান শুরু করেছেন।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক ইসাহাক আলী জানান, পাগলা শিয়ালের ভয়ে এলাকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পন্ডিত জানান, শিয়ালগুলোর মধ্যে যেগুলো এডিস ভাইরাসে আক্রান্ত, সেগুলো কামড়ালে তা থেকে রোগ ছড়াতে পারে। এজন্য আক্রান্তদের দ্রুত ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শ তারা।

নিউজবাংলা/একে