নিউজবাংলা: ১জুলাই, বুধবার:

‘ভাল মানের প্রজেক্টর নেই, প্রজেক্টর ভাড়া অনেক’- সাধারণ প্রযোজকদের অভিযোগ অনেকদিনের। প্রযোজক নেতারা এ সমস্যা সমাধানে নিজেরা প্রজেক্টর আমদানির কথা শুনিয়ে আসছিলেন এতদিন।

অবশেষে ভারতীয় ‘ইউএফও’ ডিজিটাল প্রজেকশন সিস্টেম বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে খোরশেদ আলম খসরুসহ প্রযোজকদের একটি প্রভাবশালী গ্রুপ।

‘দর্শকদের হলে আরামদায়কভাবে ছবি উপভোগ, ঝকঝকে পর্দা উপহার এবং সাধারণ প্রযোজকদের আরও লাভবান করতেই আমাদের এ উদ্যোগ। আমাদের উদ্যোগে হল মালিকরাও উপকৃত হবেন।’ বলছিলেন খোরশেদ আলম খসরু।

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদে ছবি মুক্তি পাচ্ছে চারটি। প্রতিটা ছবি ভালভাবে প্রদর্শন করা যায় এরকম ডিজিটাল হল আছে মাত্র ১০০’র মত। কিন্ত হল আছে মাত্র ৩০০। একজন প্রযোজকও চাইলেও তার ছবিটি বেশি হলে মুক্তি দিতে পারছেন না। তার প্রধান কারণ ডিজিটাল মেশিন সংকট ও মেশিন ভাড়া। এসব সংকট থেকে উত্তরণের একটি পথ হিসেবে আমদানি।’

জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘জেএক্সডি’ (জাজ এক্সট্রিম ডিজিটাল) মেশিনের মত এ মেশিনেও প্রযোজক ও হল মালিকদের গুণতে হবে ভাড়া। তবে তা অবশ্যই জাজের মেশিনের তুলনায় কম হবে, দাবি করলেন খসরু। প্রসঙ্গত, জাজের মেশিনের প্রথম সপ্তাহে প্রযোজককে ভাড়া দিতে হয় ১২ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ৫ হাজার টাকা। একই সঙ্গে হল মালিককে টিকেট প্রতি ৩ টাকা করে ‘সার্ভিস চার্জ’ গুণতে হচ্ছে।

খসরু আরও জানালেন, তারা প্রথম পর্যায়ে ২০-২৫টি মেশিন বসাবেন ঈদের আগে। তবে তাদের টার্গেট ১৫০ হলে মেশিন বসানো। তারা এখন পর্যন্ত ঢাকার শাহীন হলে মেশিন বসিয়েছেন। দু-একদিনের মাঝে ঢাকার বলাকা, মতিমহল ও অভিসারে মেশিন বসাবেন।

সারা ভারতে ‘ইউএফও’ সিস্টেমে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার হলে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া পাকিস্থান ও শ্রীলঙ্কায়ও এ সিস্টেমে প্রদর্শনী হয়। মূলত একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে সব কয়টি হলে একযোগে ছবি চালানো হয়। আমাদের এখানে ‘সার্ভার’ কোথায় বসানো হবে? খসরু বললেন, ‘আপাতত হার্ডডিস্কের মাধ্যমে ছবি চালানো হবে। এ সিস্টমের আওতায় যখন ১০০ হল চলে আসবে তখন সার্ভার সিস্টেমে যাব আমরা।’

‌’ডিজিটাল প্রজেকশনের আন্তর্জাতিক মানদন্ড হচ্ছে কমপক্ষে ‘টুকে’ রেজ্যুলেশন থাকা। জাজের মেশিন ‘ফুল এইচডি’ এবং তাদের মেশিন ‘এইচডি’। তবে তাদের চেয়েও আমাদের প্রজেকশনে ভাল দেখাবে ছবি। কারণ, জাজের মেশিন ‘ইলেকট্রিক্যাল প্রজেক্টর’ আমাদের মেশিন ডিজিটাল। জাজ এতদিন মিথ্যাচার করেছে’- জোর গলায় বললেন খসরু।

এদিকে জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিইও আলিমুল্লাহ খোকন নতুন প্রজেক্টর আমদানির বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘তারা সব পুরান মেশিন আমদানী করছেন। সব ইউজড মেশিন।’ আরও বললেন, ‘হল মালিক চাইলে আমাদের মেশিন ফেরত দিয়ে অন্য মেশিন বসাতে পারেন, আমরা কারও উপর কোন জোর জবরদস্তি করে কিছু করছি না।’

পুরান ও ব্যবহৃত মেশিন আমদানির বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে খসরু বলেন, ‘ডাহা মিথ্যা। সব ব্র্যান্ড নিউ মেশিন। আর জোর জবরদস্তির প্রশ্ন তো আসেই না।’

নতুন মেশিন নিয়ে সাধারণ প্রযোজকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তারা বলছেন, ‘যে মেশিন ভাড়ার কারণে এক কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ২০-২৫ লাখ টাকা নাই হয়ে যাচ্ছে তা যদি বন্ধ না হয় তাহলে আমাদের কি লাভ? তারপরও ভাল, আমরা ভাল কিছু সিনেমা হলে ভাল কিছু মেশিন পাচ্ছি।’

 

 

 

নিউজবাংলা/একে