নিউজবাংলা: ২৭ ডিসেম্বর, রোববার:
কুমিল্লা থেকে মোঃ আবদুর রহমান:
আখেরী মুনাজাতে লাখো মুসল্লীর আমিন আমিন ধ্বনি আর চোখের পানিতে একাকার হয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদি কান্নার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে কুমিল্লার মোস্তফাপুরে খানকায়ে ছালেহীয়া কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত তিনদিন ব্যাপী ইসালে সওয়াব মাহফিল।
গত ২৫ ডিসেম্বর রোজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা দরবারের পীর ছাহেব আলহাজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ)। আখেরী মুনাজাত শুরুর আগে ছারছীনার পীর ছাহেব তার সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বলেন, সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করাই ইসলামের কাজ। ইসলামের নামে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মানুষ খুন করা ইসলাম কখনো অনুমোদন করে না। তিনি বলেন, ছারছীনার মরহুম পীর ছাহেব কখনো রাজনীতি করতেন না, আমরাও কোন রাজনীতি করিনা। তবে ইসলাম পরিপন্থি কোন কাজ আমরা মেনে নেব না।
বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ কুমিল্লা জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপি মাহফিলে দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরামগনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজ নসীহত করেন, বাংরাদেশ জমইয়তে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ আবু নছর নেছার উদ্দীন আহমদ হুসাইন, সছারছীনা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. সাইয়্যেদ শরাফত আলী, মাওলানা মির্জা নুরুর রহমান বেগ, মাওলানা মো. রুহুল আমীন ছালেহী, মাওলানা মো. কাফিল উদ্দীন সরকার ছালেহী, মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত বিন তৈয়্যেব, মাওলানা মুহাম্মদ মাহমুদুল মুনীর হামীম, মাওলানা মো. ওসমান গণি ছালেহী, মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ, মাওলানা মো. শাহআলম, মাওলানা মো. হায়দার হুসাইন, মাওঃ কাজী মফিজ উদ্দিন জিহাদী, মাওলানা মুহাম্মদ শামসুল আলম ও এনায়েত উল্লাহ ফয়রাভী। মাহফিল সঞ্চালনায় ছিলেন মাওলানা মো. আবু বকর সিদ্দিক। মাহফিলের সার্বিক তদারকির দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ কুমিল্লা জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা ড. মুহাম্মদ রুহুল আমীন ও জমইয়াতে হিয্বুল্লাহর সাধারণ সম্পাদক আলহাজ খন্দকার নুরুজ্জামান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাদের।
ছারছীনার পীর ছাহেব আরও বলেন সমাজে ফেতনা ফ্যাসাদ বেড়ে গেছে। সুন্নতি আদলের সাজ পোশাক ও বাহ্যিক কর্মকান্ডের পরিবর্তে ইহুদি নাছারাদের কর্মকান্ড অনুসরণ চলছে। এ থেকে পরিত্রানের জন্য নিজের সন্তান, পরিবার ও সমাজকে সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, আজকে মুসলামান নামধারি কিছু আলেম মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এরা ওলি-আউলিয়া, পীর-মাশায়েখদের বিরুদ্ধে বেফাস কথাবার্তা বলে। এদের এসব কাজ রুখতে হলে হাক্কানি আলেমদের সজাগ থাকতে হবে। আল্লাহর বিধি বিধান, কুরআন সুন্নাহর আইন, নবী মুহাম্মদ (সা:) এর আদর্শ মেনে চলা, পিতা- মাতার প্রতি কর্তব্য পালন ও তাদের সেবা করা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, ত্বরিকা চর্চার আহ্বান জানান তিনি। মুরিদদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পীরের দরবারে আসবেন। দরবারের রীতিনীতি আদর্শ মেনে চলবেন। আল্লাহ ও রাসুল (সা.) এর হুকুম আহকাম মেনে চলা আমাদের প্রধান কাজ।
আলোচনা শেষে ছারছীনার পীর ছাহেব কেবলা বিকেল সাড়ে ৩ টায় আখেরী মুনাজাত শুরু করেন। প্রায় বিশ মিনিটের মুনাজাতে তিনি আল্লাহর দরবারে সকল মুসলমান নর-নারীর গুনাহ মাফ ও কবরবাসীদের আজাব মাফ চেয়ে ফরিয়াদ জানান। আমলী জিন্দেগী গড়ে তোলার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করেন মুনাজাতে। বাংলাদেশের শান্তি সমৃদ্ধি ও সারা বিশ্বের মুসলমানদের হেফাজত কামনা করা হয় মুনাজাতে। এসময় লাখো মুসল্লীর কান্নাজড়িত কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে আমিন আমিন ধ্বনি।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments