নিউজবাংলা: ১৭ জুলাই, শুক্রবার :

ঢাকা: ‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে’…এ গানটির কলি আওড়াতে আওড়াতে রিকশায় চড়ে দুই যুবক নীলক্ষেত মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল।

একজন আরেকজনকে উদ্দেশ্য করে বলছিল, দোস্ত দেখ, কী ফকফকা ফাঁকা রাস্তা। কেউ কইব দু`দিন আগে এই মোড় থাইক্যা ইউনিভার্সিটি প্রবেশের গেটে যাইতে আধা ঘণ্টা লাগছিলো। রাস্তাঘাট দেইখ্যা মনে হইতাছে ঢাকা শহরের বুকের ওপর থাইক্যা ভারি বোঝা নাইম্যা গেছে।

এ কথা শুধু এ দুই যুবকেরই নয়, ইটপাথরের চার দেয়ালে ঘেরা যান্ত্রিক শহর ঢাকা যানজটের নগরী হিসেবে সুপরিচিত হলেও ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষ নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ায় ঢাকা শহরের রাস্তা ঘাট এখন অনেকটাই ফাঁকা।

যারাই শুক্রবার কেনাকাটা বা অন্য কোনো প্রয়োজনে বাইরে বেরিয়েছেন সকলেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন। বুক ভরে নিশ্বাস আর গুণগুণ করে গানের কলি আওড়াতে আওড়াতে খুবই অল্প সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেছেন।

শুক্রবার এ প্রতিবেদক নগরীর ধানমন্ডি, লালবাগ, মোহাম্মদপুর ও  তেজগাঁও থানা এলাকায় ঘুরে দেখেছেন অধিকাংশ রাস্তাঘাটই একেবারেই যানজটমুক্ত, ফাঁকা। ভিআইপি রোড দিয়ে দ্রুতবেগে চলে যাচ্ছে রিকশা ও ভ্যানগাড়ি।

ঈদের কাছাকাছি বিভিন্ন বিপণি-বিতানের সামনে কিছুটা যানজট থাকলেও অন্য সব রাস্তায় নির্বিঘ্নে গণপরিবহন বাস, টেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বেবি ট্যাক্সি ও প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করছে।

কোথাও শব্দ বা বায়ু দূষণকারী কালো ধোঁয়া নেই। যানজট এড়াতে যে ট্রাফিক পুলিশকে দু`দিন আগেও হিমশিম খেতে দেখা গেছে তাদেরও অনেকটা প্রশান্ত চিত্তে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

শাহবাগ এলাকায় কথা হয় গুলিস্তান-মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী একটি বাসের হেলপার সাত্তার মিয়ার সাথে। সে জানায়, গত কয়েকদিন রাস্তাঘাটে যানজট এতটাই তীব্র  ছিলো যে গুলিস্তান থেকে শাহবাগ পৌঁছাতে কখনও ৩০মিনিট, কখনও ৪৫মিনিট আবার কখনও ১ ঘণ্টাও লেগে যেতো। শুক্রবার দুপুরে গুলিস্তান থেকে শাহবাগ আসতে সময় লেগেছে মাত্র ৫ মিনিট।

লালবাগের ক্ষুদে ব্যবসায়ী আসলাম মিয়া ব্যক্তিগত একটি কাজে গুলিস্তান গিয়েছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এসে দেখেন দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা একেবারেই ফাঁকা। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আহা ঢাকা শহরটা যদি সারা বছর এমন ফাঁকা থাকতো।

আবদুস সালাম নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, তার দামি গাড়ি থাকার পরও গত কয়েকদিন রিকশা ও পায়ে হেটে বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে গিয়েছেন। অনেকে হাসাহাসি করলেও গাড়ি নিয়ে রাস্তায় যানজটে বসে থাকার চেয়ে পায়ে হেটে চলাই ভাল বলে মনে করেছেন তিনি। আগামী কয়েকটা দিন স্ত্রী, ছেলে মেয়ে নিয়ে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে পারবেন বলে তিনি বেজায় খুশি।

 

নিউজবাংলা/একে