নিউজবাংলা: ২৮জুলাই : মঙ্গলবার
ঢাকা: একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন ও দেশান্তরসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা)`র মামলা আপিল বিভাগের বুধবারের কার্যতালিকায় তালিকায় এক নাম্বারে রয়েছে।

আপিল বিভাগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের সুপ্রিমকোর্টের আাপির বিভাগের বিশেষ বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবেন।

বিশেষ বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

গত ৭ জুলাই মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২৯ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। ওইদিন আদালতে সাকা চৌধুরীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এএসএম শাহজাহান এবং উপস্থিত ছিলেন- তানভীর আহমেদ আল-আমিন ও হুজ্জাতুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন মেহেদী।

এর আগে গত ১ জুলাই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন থেকেই আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাহজাহান আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।

গত ১৬ জুন শুনানি শুরু করে ৮ কার্যদিবস ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষীদের সাক্ষ্য-জেরা এবং রায় সংক্রান্ত নথিপত্র (পেপারবুক) উপস্থাপন করে আসামিপক্ষ। গত ৩০ জুন ও ১ জুলাই রাস্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করা হয়।

গত ১ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ন্যায় ও অতি প্রয়োজন। যুদ্ধের সময় সাকা চৌধুরী পাকিস্তানি বাহিনী ও নিজস্ব বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে তান্ডব চালিয়েছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ওপর বেশি হামলা করা হয়। যেন তারা দেশ ছেড়ে চলে যান। এসব অপরাধের চারটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল এ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছে। তাই ওই দণ্ড বহাল রাখার আর্জি পেশ করে রাস্ট্রপক্ষ।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর পরই গত ১৬ জুন শুরু হয় আপিল বিভাগে আসা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে পঞ্চম আপিলের শুনানি। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিল আবেদনটি আপিল বিভাগে পঞ্চম আপিল মামলা।

২০১৩ সালের ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাকা চৌধুরীকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রায়ে বলা হয়, সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ৯টি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬ ও ৮ নং অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড। ২, ৪ ও ৭ নং অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে ২০ বছর করে জেল এবং ১৭ ও ১৮ নং অভিযোগে তাকে ৫ বছর করে জেল দিয়ে রায় ঘোষণা করেছে ট্রাইব্যুনাল-১।

এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ২৩টি অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। সাকা চৌধুরীকে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে হরতালে গাড়ী পোড়ানো ও ভাংচুরের এক মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তদন্তের স্বার্থে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সে থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নিউজবাংলা/একে