ঢাকা: রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা জনসাধারণের জন্যে সুন্দরবনে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে সহসাই সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূলীয় বনে আশঙ্কাজনক হারে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বন বিভাগ। এরই মধ্যেই এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার করা হয়েছে।
চলতি বছরেই শুধুমাত্র পাঁচটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যান্য বছরে এই সংখ্যা থাকে সর্বোচ্চ একটি কিংবা দুটি বলে জানালেন সুন্দরবনের শীর্ষ বনরক্ষক জহির উদ্দিন আহমেদ।
এমন পরিস্থিতিকে ‘খুবই আশঙ্কাজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত রবিবারই সুন্দরবনে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কথিত ছয় বনদুস্য নিহত হয়েছেন। তাদের কাছ থেকে তিনটি বাঘের চামড়া, বাঘের হাড় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
চীনের প্রাচীন কাল থেকেই ঔষুধ তৈরিতে বাঘের চামড়া এবং হাড় ব্যবহার হয়ে আসছে এবং এসব ঔষুধ বেশ মূল্যবানও বটে।
জহির উদ্দিন আরও বলেন,‘উদ্ধার করা বাঘের এসব চামড়ায় কোনো ক্ষত চিহ্ন বা বুলেটের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সুতরাং বোঝাই যায় বিষ প্রয়োগে বাঘগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে আমাদের এই পরিস্থিতিকে বন্ধ করতে হবে।’
বনবিভাগের কর্মীরা দশ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারত বাঘ বাঁচাতে যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্যের দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা জাহিদুল কবির বলেন, ‘বাঘ বাঁচাতে অবশ্যই বনের মধ্যে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ প্রয়োজন। এভাবে যদি বনের মধ্যে চোরাশিকারীদের প্রবেশ বন্ধ করতে না পারলে আগামী দশ বছরে সুন্দরবন বাঘশূন্য হয়ে যাবে।’
বন কর্তৃপক্ষের ধারণা, দৈনন্দিন কর্মসংস্থানের নামে যারা সুন্দরবনে আসে যেমন জেলে, মৌয়াল এদের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে চোরা শিকারী।
উল্লেখ্য, গত মাসে প্রকাশিত বাঘ শুমারির প্রতিবেদনে দেখা যায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এক দশক আগের হিসাবে বনে বাঘ ছিল ৪৪০টি, কিন্তু গতমাসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে এই সংখ্যা ১০৬টিতে নেমে এসেছে।
প্রধানত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বাস ভারতে। ভারতে মোট দুহাজার ২২৬টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে। স্বল্প পরিমাণে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান, চীন এবং মিয়ানমারে।