নিউজবাংলা: ২৩আগষ্ট,রোববার:
ঢাকা: রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। এই সৌন্দর্যকে আরো প্রসারিত করেছে পাহাড়ি তিন কন্যা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলা। দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা শহরের কোলাহল জীবন ছেড়ে শান্তির খোঁজে আসেন এই পাহাড়ে। পাহাড়ের সঙ্গে মিল রেখে প্রকৃতি পাহাড়ি জনপদেও দিয়েছে অপার সৌন্দর্য।
অতি সাধারণ ও হতদরিদ্র এসব মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করছে বিদেশি সাহায্য সংস্থা ও সরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনয়নের চেষ্টা সবার। বর্তমান সরকারের উদ্যোগ শান্তির সুবাতাস সর্বত্র বিরাজমান_ যা পাহাড়েও বিদ্যমান। শত চেষ্টার পরও পাহাড়ি জনজীবনের যে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ তা যেন থামছে না_ বিশেষ করে খাবার পানি, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বেসরকারি উদ্যোগ সফলতার আলো এখনো দেখেনি। এই পাহাড়ি জনজীবনের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তুলা উন্নয়ন বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলে অতি প্রাচীনকাল থেকে ঝুম চাষের সঙ্গে তুলাচাষ হয়ে আসছে। এই তুলার বৈজ্ঞানিক নাম Gossypium arboreum যা Asiatic Cotton/Hill Cotton/comilla Cotton নামে পরিচিত। এই তুলার অাঁশের দৈর্ঘ্য অনেক কম বিধায় তা দিয়ে উন্নতমানের সুতা তৈরি করা সম্ভব হয় না। সাধারণত তাদের বস্ত্র এবং ঠা-া নিবারণের জন্য তা ব্যবহার হয়ে আসছে যুগের পর যুগ। বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাষ হচ্ছে Gossypium hirsutum যা upland Cotton নামে পরিচিত এবং এর ফলন, জীবনচক্র, অাঁশের গুণগত মান অনেক ভালো। তাছাড়া এর মূল্যও অনেক বেশি। তুলা উন্নয়ন বোর্ড পরীক্ষামূলকভাবে বিগত ২-৩ বছর ধরে upland Cotton পাহাড়ের ভ্যালিতে চাষ করে তা পাহাড়ি চাষিদের কাছে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। KGF-এর অর্থায়নে সমভূমির তুলার সঙ্গে আন্তঃফসল হিসেবে ধান ঝুমচাষের বিকল্প হিসেবে চাষি পর্যায়ে প্রসারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ২-৩ বছর আগে। বিগত মৌসুমে তিন পাহাড়ের ৭০০ বিঘা জমিতে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়েছিল অত্যন্ত সফলভাবে। ২ সারি ধান ও ১ সারি তুলা চাষিপর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দিনের পর দিন।
বর্তমান মৌসুমে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নিবিড় তুলাচাষ কর্মসূচি, সম্প্রসারিত তুলাচাষ প্রকল্প (ফেজ-১), তুলা উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প এবং রাজস্ব বাজেটের আওতায় তুলাচাষ সম্প্রসারণ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। গবেষণা পর্যায়ে ২ সারি ধান ও ১ সারি তুলা, ঝুমের সঙ্গে ২ সারি ধান ১ সারি তুলা (পাহাড়ি ও সমভূমি) কার্যক্রম এই মৌসুমে মাঠপর্যায়ে Participatory Research হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অতি প্রাচীন পাহাড়ি তুলার প্রদর্শনী ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি সমভূমির তুলাচাষও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই চাষের মাধ্যমে পাহাড়ি জনগণের খাদ্য ও বস্ত্র দুটিই মিলবে ঘুচবে অর্থনৈতিক দুরবস্থা।