নিউজবাংলা: ২৩আগষ্ট,রোববার:
ঢাকা: ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিন থেকে টানা ৯২ দিনের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে মাঠের কর্মসূচিতে নেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। দলীয় কিংবা জোটগতভাবে রাজপথে কর্মসূচিতেও নেই তারা।

আর এতেই বেশ ‘শঙ্কায়’ পড়েছে আওয়ামী লীগ। সম্প্রতি ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যে এমন ইঙ্গিতই উঠে আসছে।
আওয়ামী লীগ নেতারাও মনে করেন, বিএনপি রাজপথের কর্মসূচিতে না থাকলেও সরকার পতনের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। রাজপথের আন্দোলনে থাকলে বিরোধী দলগুলোর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সরকার সজাগ থাকতে পারে।
এদিকে জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের আসন অলংকৃত করছে। সেই জাতীয় পার্টির খোদ চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বুধবার রংপুরের পল্লী নিবাস বাসভবনে নিজেই স্বীকার করেছেন, ‘দেশে বিরোধী দল বলতে কিছু নেই।’ এমতাবস্থায় দেশে সুশাসন ও আইনের শাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরিস্থিতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বিএনপি যতদিন মাঠে ছিল ততদিন তাদের গতিবিধি (মুভমেন্ট) আমরা বুঝতে পেরেছি। কিন্তু এখন যখন তারা মাঠ ছেড়ে দিয়েছে, তাদের গতিবিধি (মুভমেন্ট) বোঝাটা মুশকিল।’
জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘১৫ আগস্ট ইতিহাসের কালো দিন। কলঙ্কের দিন। বাংলাদেশে যেন এ রকম কিছু আর না ঘটে সে জন্য জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে।’
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমাদের প্রতিপক্ষ দুর্বল হয়ে গেছে। মাঠে এখন প্রতিপক্ষ খুব দুর্বল। প্রতিপক্ষ দুর্বল হলে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ১৫ আগস্টের আগে এমনটাই হয়েছিল। তখন আমরা নিজেরা যুদ্ধ করেছিলাম বলেই মোশতাকের মতো বেইমান বিশ্বাসঘাতকতা করার সুযোগ পেয়েছিল। মোশতাক আমাদের মধ্যেই ছিল। প্রতিপক্ষকে দুর্বল মনে করে আমরা যদি নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু করি তাহলে আমাদের সামনে বিপদ আসবে।’
কেন্দ্রীয় নেতাদের এ ধরনের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা আর খুনী মোশতাকের মতো কাউকে দেখতে চাই না। আমরা পুরাতন কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।’
এ বিষয়ে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েই ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। সরকারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। লন্ডনে, গুলশানে বসে ষড়যন্ত্র চলছেই।’
বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকারের পরিস্থিতি ভাল নয়। দেশে বিরোধী দলের কোনো আন্দোলন নেই। রাজপথের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিরোধী দল সরকারকে কোনো রকম প্রেসারও দিচ্ছে না। তার পরও সরকারের মধ্যে অস্থির অবস্থা চলছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না। নামমাত্র মেকি বিরোধী দল রয়েছে। সরকারের নৈতিক কর্তৃত্ব আজ দেশে প্রতিষ্ঠিত নেই। দেশে শুধু খাই খাই নয়, আজ ঘরে ঘরে খুন হচ্ছে। সে জন্য দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মেকি সংসদ নিয়ে সরকার আগানো যায় না।
রিপন বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ নির্বাচন।

তথ্যসূত্র:দ্য রিপোর্টক

নিউজবাংলা/একে